দেব গোস্বামী, বোলপুর: রাজ্যে ফের খুন তৃণমূল নেতা! রক্তাক্ত নানুর। শুক্রবার রাতে ‘খুন’ হলেন বুথ সভাপতি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। তাঁরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়। মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী।
মৃত তৃণমূল বুথ সভাপতির নাম রাসবিহারী সর্দার ওরফে দোদন (৫০)। তিনি নানুরের থুপসড়া অঞ্চলের তৃণমূল বুথ সভাপতি ছিলেন। শুক্রবার রাতে নানুর থুপসড়া অঞ্চলের পাতিছাড়া গ্রামে নাটমন্দিরে বসেছিল গ্রামবাসীদের আড্ডা। সেই আড্ডার মাঝেই হঠাৎই দুই পক্ষ বচসায় জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ সেই সময় একদল দুষ্কৃতী লোহার রড, শাবল নিয়ে নির্বিচারে হামলা চালাতে থাকে। রাসবিহারীবাবুকে মাটিতে ফেলে একের পর এক আঘাত করতে করে থাকে দুষ্কৃতীরা। তাঁকে বাঁচাতে গেলে আরও পাঁচজন গুরুতর জখম হন। তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে আহত পাঁচজন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এত দ্রুত বিষয়টি ঘটেছে পালানো বা সেই মতো প্রতিরোধের সময় মেলেনি। হামলা চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীর দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নানুর থানার পুলিশ। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। মৃতের ছেলে মানব সর্দার বলেন, “পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে নাটমন্দিরের কাছে এসেছিলেন বাবা। সেই সময় কয়েকজন শাবল, লোহার রড, দিয়ে কোপাতে থাকে। বাবা সেখানেই মারা যান। আমাদের আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। থানায় এফআইআর দায়ের করেছি। পুলিশ এসেছিল। আমি বাবার হত্যাকারীদের শাস্তি চাই।” অশান্তি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের বিবাদের জেরেই এই হামলা। দুষ্কৃতীদের খোঁজে গ্রামজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনায় রাজনৈতিক রং খুঁজে পাচ্ছে গ্রামবাসীদের একাংশ।
কী কারণে হামলা? তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। আড্ডার মাঝে সৃষ্টি হওয়া বচসার জেরেই হামলা, নাকি এই হামলা পূর্ব পরিকল্পিত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আজ, শনিবার পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট হাসপাতালে রাসবিহারীবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তারপর দেহ নিয়ে আসা গ্রামে। চাপা উত্তেজনা রয়েছে নানুরজুড়ে।