হলদিয়া: শিলান্যাসের ৫ বছরের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু আইওসি’র লুব্রিকেটিং অয়েল
বর্তমান | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, হলদিয়া: প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা হলদিয়া আইওসি রিফাইনারির নতুন লুব্রিকেটিং অয়েল বা লুব অয়েল প্ল্যান্টের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হল। শুক্রবার নবনির্মিত ইউনিট থেকে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে প্রথম বাণিজ্যিক গাড়ি যাত্রা শুরু করে। উচ্চ গুণমানের গ্রুপ-থ্রি লুব অয়েল বেস স্টক (৮সিএসটি) বোঝাই প্রথম ট্যাঙ্কার প্ল্যান্ট থেকে বেরনোর সময় সবুজ পতাকা নাড়িয়ে উদ্বোধন করেন আইওসির ডিরেক্টর (রিফাইনারিজ) অরবিন্দ কুমার। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া আইওসি রিফাইনারির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং প্ল্যান্ট হেড অতনু সান্যাল ও অন্যান্য সিনিয়র আধিকারিকরা। ২০২১ সালে হলদিয়া এসে এই প্ল্যান্টের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন ওই প্ল্যান্ট থেকে পণ্য উৎপাদন শুরু হওয়ার ঘটনাকে নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইওসি। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া আইওসি রিফাইনারির নতুন এই লুব অয়েল প্ল্যান্ট অর্থাৎ ক্যাটালেটিক ডি-ওয়াক্সিং ইউনিট ভারতে সর্ববৃহৎ লুব অয়েল প্ল্যান্ট হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, দেশে সর্বপ্রথম উৎকৃষ্টমানের লুব অয়েলের চাহিদা পূরণ করবে বলে দাবি আইওসির। এদিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আইওসি জানিয়েছে, উচ্চমানের লুব্রিকেন্ট বেস অয়েল উৎপাদনে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার পথে এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অত্যাধুনিক রিফাইনিং প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সিআইডিডব্লু-ওয়ান ইউনিট উচ্চ বিশুদ্ধতার গ্রুপ-থ্রি বেস অয়েল উৎপাদনে দেশকে সক্ষম করেছে। এই লুব অয়েল নেক্সট জেনারেশন ইঞ্জিন অয়েল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লুব্রিকেন্ট এবং প্রিমিয়াম অটোমোটিভ হিসেবে দেশীয় পরিবহণ শিল্পে সাশ্রয় করবে। উন্নতমানের লুব উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে আমদানি নির্ভরতা কমবে।
হলদিয়া আইওসি রিফাইনারির বিশেষত্ব হল, দেশের মধ্যে একমাত্র এখানেই লুব অয়েল তৈরি হয়। পরিবহণ শিল্পে লুব অয়েল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আইওসির ‹সার্ভো› লুব অয়েল ব্র্যান্ড নতুন করে শুধু দেশ নয়, এবার বিদেশের বাজার দখলে ঝাঁপিয়ে পড়বে। আইওসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লুব অয়েলের জন্য এতদিন দেশের পরিবহণ শিল্পকে আমদানির উপর ভরসা করতে হতো। হলদিয়ার প্ল্যান্ট চালু হওয়ায় আমদানি খরচ কমবে এবং বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। আইওসি রিফাইনারি এখন সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব দিয়েছে।
এদিন লুব অয়েল প্ল্যান্ট থেকে বাণিজ্যিক পণ্য চলাচল শুরু হওয়ার পাশাপাশি আরও একটি নয়া প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। পারাদ্বীপ রিফরমেট রিসিপ্টের উদ্বোধন হয়েছে এদিন। মোটর স্পিরিট বা পেট্রল তৈরির মূল উপাদান হল রিফরমেট। আইওসির হলদিয়া রিফাইনারিতে ওই রিফরমেট এতদিন জাহাজে করে হলদিয়া বন্দর মারফৎ আসত। এবার সেই রিফরমেট সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে পারাদ্বীপ থেকে হলদিয়া আসতে শুরু করেছে। পারাদ্বীপ-সোমনাথপুর- হলদিয়া পাইপলাইন মারফত হলদিয়া রিফাইনারিতে ওই বিশেষ তরল আসবে। একটি ভালভের চাকা ঘুরিয়ে পারাদ্বীপ রিফরমেট রিসিপ্টের উদ্বোধন হয়েছে। পণ্য পরিবহণে এই কৌশলগত পরিবর্তনের ফলে খরচ সাশ্রয় হবে, দূষণ কমবে, সাপ্লাই চেইনের স্থিতিশীলতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। হলদিয়া রিফাইনারির অপারেশন, মার্কেটিং ও পাইপলাইন ডিভিশনের দলগত কাজের প্রশংসা করে অরবিন্দ কুমার বলেন, আপনাদের নিষ্ঠা ইন্ডিয়ান অয়েলকে অগ্রগতির নতুন যুগে পৌঁছে দিয়েছে।