টানা তিন দিন দুর্ভোগের পরে শনিবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে ইন্ডিগোর ফ্লাইট পরিষেবা। এমনই দাবি দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। তাঁদের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ইন্ডিগোর ফ্লাইট পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার দিকে এগোচ্ছে।
যদিও যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, এখনও সমস্যা মেটেনি। তাঁদের ফ্লাইট সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য না দেওয়ারও অভিযোগ তোলা হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের এক যাত্রীর দাবি, তাঁর কাছে ফ্লাইট বাতিলের মেসেজ যায়। কিন্তু তিনি এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেখেন সেই ফ্লাইট বাতিল হয়নি। কলকাতা বিমানবন্দরে ইন্ডিগোর অন্য এক যাত্রী জানান, তাঁকে ফ্লাইট লেটের মেসেজ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা বিমানবন্দরের ডিসপ্লে বোর্ডে আপডেট করা হচ্ছে না। এ দিন কলকাতা থেকে শিডিউল ৪১টি ফ্লাইট এ দিন বাতিল করা হয়েছে, জানা গিয়েছে এমনটাই। পাশাপাশি কেরালার তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর থেকে যথাক্রমে তিনটি ডোমেস্টিক ফ্লাইটের ওঠা-নামা বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিভ্রাটের ঘটনায় যাত্রীদের ক্ষতির বিষয়টি সামনে রেখে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে ‘ইন্ডিগো অল প্যাসেঞ্জার অ্যান্ড অ্যানাদার’-এর তরফে। সেই আবেদন জানানো হয়েছে দেশের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তকে এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করার জন্য। একই সঙ্গে আবেদনে বলা হয়েছে, বিমান মন্ত্রক এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-কে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিক আদালত। এই ঘটনার দ্রুত শুনানির আর্জিও সেখানে জানানো হয়েছে।
গত প্রায় তিন দিন ধরে ইন্ডিগো-র বহু ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে উল্লেখযোগ্য বার্তা দিলেন বিমানমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু। তিনি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এই ঘটনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোটা পরিস্থিতিতে কোথায় সমস্যা ছিল, তার জন্য কে দায়ী, তা খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। যে বা যাঁরা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী, তাঁদের মূল্য চোকাতে হবে।’ তিনি আরও জানান, আপাতত পরিষেবা স্বাভাবিক করাই অগ্রাধিকার পাবে। যাত্রীদের সমস্ত সাহায্য করা হবে বলেও জানান তিনি। পরিস্থিতির উপরে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে, জানান এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, যাত্রী সুরক্ষা নিয়ম কার্যকর করতে গিয়ে চরম বিপর্যয়ের মুখে দেশের বৃহত্তম উড়ান সংস্থা ইন্ডিগো। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই সমস্যায় গত বুধ, বৃহস্পতি, শুক্রবার দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু-সহ দেশের অন্যতম বিমানবন্দরগুলিতে সংস্থার প্রায় ১০০০টি ফ্লাইট বাতিল হয়। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় একাধিক যাত্রীদের।