অফিস থেকে ফিরে এক কাপ গরম চা চাই-ই। সোফায় জমিয়ে বসে টিভির রিমোট নিয়ে চ্যানেল সার্ফিং। সেই অখণ্ড অবসরে যদি অফিসের বসের ফোন আসে? ফের বসতে হয় কাজে? বিরক্তির একশেষ। আগামী দিনে হয়তো এমন পরিস্থিতিতে আর পড়তে হবে না। শুক্রবার ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট, ২০২৫’ বিল পেশ হলো লোকসভায়। অফিসের কাজের পরে কিংবা ছুটির দিনে কর্মীদের আর কাজ সংক্রান্ত ফোন বা ই-মেলের জবাব দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
কোনও ইস্যুকে আইন প্রণয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে লোকসভা বা রাজ্যসভার যে কোনও সদস্য সংসদে বিল পেশ করতে পারেন। সেই সাংসদ সরকারে না থাকলেও সমস্যা নেই। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংসদে বিতর্কের পরে সেই বিল প্রত্যাহার করে নেওয়াই রীতি। এ দিন ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট, ২০২৫’ বিল পেশ করেন এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে।
কর্পোরেট কালচারে তো বটেই, আধুনিক কাজের জগতে একটা কথা চালু রয়েছে, ‘অলওয়েজ অন।’ মানে, যে কোনও সময়ে কাজ আসতে পারে। তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এমন কর্মসংস্কৃতিতে ছুটি বলে আর কিছু থাকছে না বলে অভিযোগ অনেকেরই।
প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, অফিসের পরে কিংবা ছুটির দিনে আর কাজ সংক্রান্ত কোনও ফোন ধরা বা ইমেলের উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। এর জন্য কর্মীদের কোনও চাপ বা শাস্তিও দেওয়া যাবে না। কর্মীদের জন্য ‘এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অথরিটি’ নামে কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও মহিলাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় ‘মেনস্ট্রুয়াল বেনিফিটস বিল, ২০২৪’ পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ কাদিয়াম কাভ্যা। পিরিয়ডের সময়ে কর্মরত মহিলাদের বিশেষ সুবিধা, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ এবং স্যানিটেশনের ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে এই বিলে। পাশাপাশি পিরিয়ডের সময়ে পেড মাসিক ছুটির প্রস্তাব দিয়ে বিল এনেছেন এলজেপি সাংসদ শম্ভাবী চৌধুরী।
মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা NEET নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছে। এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক রাখার বদলে ঐচ্ছিক করে দেওয়ার প্রস্তাব এনে বিল পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ মানিকম ট্যাগোর। পাশাপাশি দেশ থেকে মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বিল উপস্থাপন করেছেন ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি করুণানিধি। এই নিয়েও গত কয়েক বছরে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
সাংসদ বিশালদাদা প্রকাশবাপু পাটিল সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘জার্নালিস্ট বিল, ২০২৪’ পেশ করেছেন। সাংবাদিকদের উপরে হামলা এবং তাঁদের সম্পত্তির সুরক্ষার কথা রয়েছে এই বিলে।