SIR ভয়ে দেশে ফিরতে চেয়ে থানায় ১১ বাংলাদেশি, জেলে পাঠাল আদালত
আজ তক | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দেশে ফেরার আবেদন জানাতে নিজেরাই থানায় গিয়েছিলেন ১১ জন বাংলাদেশি। কিন্তু অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগ থেকে রেহাই মিলল না। বৃহস্পতিবার কোচবিহার আদালত তাঁদের মধ্যে ৮ জনকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা (অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেল) শুনিয়েছে। বাকি তিনজন শিশু হওয়ায় তারা মায়েদের সঙ্গে সংশোধনাগারেই থাকবে। তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেবে জেল কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ৫ জুন। আচমকাই ১১ জন বাংলাদেশি কোতোয়ালি থানায় হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশকে জানান, তাঁরা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং গত দশ বছর ধরে নানা রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দেশে বাংলাদেশিদের ধরপাকড়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্কে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, নিজেদের দেশে ফিরতে হবে। আর সেই কারণেই থানায় এসে জানান, “আমাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিন।”
কিন্তু আত্মসমর্পণের সঙ্গেই অপরাধও স্বীকার করে ফেলায় পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। তদন্তে উঠে আসে, কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ ও সাহেবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে দালালের মাধ্যমে তাঁরা ভারতে ঢুকেছিলেন। পরে হরিয়ানার একটি ইটভাটায় কাজ করতেন বলেও জানা যায়। দেশজুড়ে পুশব্যাকের খবর ছড়াতেই হরিয়ানা থেকে ট্রেনে কোচবিহার এসে প্রথমে দিনহাটা, তারপর কোতোয়ালি থানায় পৌঁছান তাঁরা।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের হাজির করা হয় কোচবিহার আদালতের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয় কোর্ট) রুদ্রপ্রসাদ রায়ের এজলাসে। বিচার শেষে মজিদুল ইসলাম, মৌসম রানা, জাহিদুল ইসলাম, নয়ন ইসলাম, মহম্মদ কপিল হক, রেখা বিবি, কোহিনুর বেগম এবং জিনা বেগমকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিন শিশু সংশোধনাগারে মায়েদের সঙ্গেই বড় হবে। পিএম শিবেন রায় জানিয়েছেন, বিদেশি আইনের অধীনে আইনানুগ সাজা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে সীমান্ত সুরক্ষা, দালালচক্র এবং দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে কর্মরত বিদেশিদের খুঁজে বের করার প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে।