অয়ন ঘোষাল: "আমি কোনও অসাংবিধানিক কাজ করছি না। ধর্মস্থান তৈরির অধিকার একটি সংবিধান বর্ণিত অধিকার। বাবরি মসজিদ হবেই হবেই হবেই।" বাবরির শিলান্যাস মঞ্চ থেকে সদর্পে ঘোষণা হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir Babri Masjid)। এমনকি তাঁর এই বাবরি মসজিদ নির্মাণে দেশের এক শিল্পপতি ৮০ কোটি দিচ্ছেন বলে ঘোষণা করলেন হুমায়ুন কবীর (Murshidabad Humayun Kabir Babri Masjid)।
হুমায়ুন কবীর বলেন, "যে আল্লা কে ভালোবাসে তার কাজে সাফল্য আসে। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ নাকি বিতর্কিত জমিতে ছিল। ওখানে নাকি রামের জন্ম হয়েছিল... এখন দেশে ৪০ কোটি মুসলিম। রাজ্যে ৪ কোটি মুসলিম। সেখানে একটা মসজিদ করতে পারব না?" প্রশ্ন তোলেন তিনি। আরও বলেন, "৩৩ বছর আগে মুসলিমদের মনে যে আঘাত লেগেছিল আজ সেই ক্ষতে সামান্য একটা প্রলেপ। এক শ্রেণির মানুষ এটা হতে দিতে চাইনি। বলা হয়েছে, বাবরি মসজিদ করলে আমার মাথার দাম ১ কোটি টাকা হবে!" চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন, "আমি সতর্ক করছি আমার কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখান।"
হুমায়ুন কবীর জানান, মসজিদের পাশাপাশি ওই জমিতেই সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ হবে। হাসপাতাল হবে। হোটেল হবে। হেলিপ্যাড হবে। মোট বাজেট ৩০০ কোটি। এক শিল্পপতি দিচ্ছেন ৮০ কোটি টাকা। যদিও তাঁর নাম প্রকাশ করেননি হুমায়ুন কবীর। একইসঙ্গে জানান, "২২ তারিখ নতুন করে রাজনীতির কথা হবে। সেদিন অনেক নতুন কথা বলব নতুন তথ্য দেব।"
মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করতে সৌদি আরব থেকে এসেছেন ইসলাম ধর্মগুরু হজরত মাওলানা মুফতি সুফিয়ান। মদিনা থেকে এসেছেন আরেকজন ধর্মগুরু শেখ আবদুল্লা। এর পাশাপাশি, ভিত্তিপ্রস্তর উপলক্ষে সাধারণ মানুষকে যে যার সাধ্যমতো কেউ দুটো, কেউ চারটে, কাউকে ৬টা ইট নিয়ে সভাস্থলে আসতে দেখা যায়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে দান অর্থাৎ ইমারতি খয়রাত হিসেবে এই ইট এনেছেন তাঁরা। স্থানীয় এক ডাক্তার দেন ১ কোটি টাকা।
হুমায়ুনের বাবরি মসজিদের শিলান্যাস উপলক্ষে আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে শিলান্যাস এলাকার আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে হরিহরপাড়া থানার আইসি। তিনি ভোর থেকেই স্পটে আছেন। সঙ্গে পুলিশের বিশাল বাহিনী। গোটা রেজিনগর এলাকাকে ৮ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি সেক্টরে একজন করে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক। ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রতি ৫ কিলোমিটার অন্তর হাফ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় আধা সেনা মোতায়েন। একদম অন্যরকম ছবি বেলডাঙায়। রয়েছে রাজ্য পুলিশের মহিলা কমব্যাট ফোর্স উইনার্সও। পুলিশ আজ টোটো বের করারও অনুমতি দেয়নি ভিড়ের কারণে।
ওদিকে হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের ঘটনাকে কটাক্ষ করে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য তোপ দাগেন, "বাবরের সরকার চলছে। হিন্দু বিরোধীদের সরকার চলছে। রোহিঙ্গাদের সরকার চলছে। বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীদের সরকার চলছে। তাদেরকে সমর্থন করা হচ্ছে।"