• ধর্মই শান্তি ও সহমর্মিতার পথ দেখায়, তা রাজনীতির হাতিয়ার নয়: জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্ট
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বিধান সরকার: ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভাঙা হয়েছিল বাবরি মসজিদ (Babri Masjid)। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট পাহাড়ে অবস্থিত মসজিদ ভাঙতেই উত্তাল হয়েছিল দেশ। মনে করা হয়েছিল যে, রাম জন্মভূমিতে গড়ে উঠেছিল সেই মসজিদ। ক্যালেন্ডার বলছে শনিবার অর্থাৎ আজ ফের এক ৬ ডিসেম্বর। ৩৩ বছর পর ফের 'বাবরি' প্রসঙ্গ। তবে এবার উত্তরপ্রদেশ নয়, ঘটনার কেন্দ্রে বাংলা। মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে 'বাবরি মসজিদ' শিল্যান্যাস করছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। আর যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলছে রাজনৈতিক বিতর্ক। আর এই অস্থির আবহে শ্রীরামপুর মাহেশ জগন্নাথ (Mahesh Jagannath Temple) মন্দিরের সম্পাদক পিয়ালকৃষ্ণ অধিকারী দিলেন সম্প্রীতির বার্তা।

    পিয়ালকৃষ্ণ বলেন, 'আমরা চৈতন্য মহাপ্রভুর আদর্শে অনুপ্রাণিত। মহাপ্রভু যখন হরিনাম সংকীর্তনে বেরিয়েছেন, তখন তিনি কখনও দেখেননি কে চণ্ডাল, কে বৈশ্য, কে ক্ষত্রিয় বা কে ব্রাহ্মণ। সকলকে সমান ভাবে আলিঙ্গন করেছিলেন হরিনামের আহ্বানে। এই আদর্শই আমাদের পথপ্রদর্শক। মন্দিরে যখন আমরা বিশ্বশান্তির যজ্ঞ করি, সেখানে কারা আহুতি দিচ্ছেন তা দেখে কাউকে আলাদা করা হয় না। জাত বা শ্রেণির পরিচয়ে কাউকে কখনও বাদ দেওয়া হয়নি। আমরা সনাতনী হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী, কিন্তু পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতিও সমান শ্রদ্ধাশীল। নিজের ধর্মকে ভালোবাসার সঙ্গে অন্য ধর্মকেও সম্মান করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। ধর্ম কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। ধর্ম এক ধরনের ইম্যাটেরিয়াল বা আত্মিক ধারণা। মানুষ ভুল করতে পারে, কিন্তু ধর্মকে কখনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানো একেবারেই অনুচিত।'

    আগামীকাল ব্রিগেডে '৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ' অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, 'আমি মাহেশ মন্দিরের সেবাইত পরিবারের সন্তান হিসেবে মূল মঞ্চে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছি। গীতা কখনও অন্য ধর্মকে ঘৃণা করতে শেখায় না। আমি গীতাকে ভালোবাসি, সেই কারণেই গীতা পাঠ ও অধ্যয়নে অংশগ্রহণ করব।' আগামী ৩১ জানুয়ারি ও ১ লা ফেব্রুয়ারি মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে গীতা বিষয়ক একাধিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। ওইসব অনুষ্ঠানে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হবে। পিয়ালের কথায়, 'ধর্ম হোক শান্তি, সহমর্মিতা ও ভালোবাসার পথ, এই শিক্ষাই আমাদের চিরন্তন উত্তরাধিকার।' পিয়ালকৃষ্ণ বুঝিয়েই দিলেন ধর্মের সঙ্গে রাজনীতির সহাবস্থান কখনই নয়।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)