বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার দম্পতির দেহ, স্ত্রীকে খুনের পর নিজেকে শেষ করলেন স্বামী?
প্রতিদিন | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে স্ত্রীর নিথর দেহ! ওই ঘরেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায় স্বামীকে! স্ত্রীকে বটি দিতে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী? চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার জয়পুরে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃত ওই দম্পতির নাম অলোক মণ্ডল ও মুক্ত মণ্ডল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শনিবার সকাল থেকেই ওই বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দও পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক, ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। এরপর প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। হতভম্ব হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। বিছানায় রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্ত্রী মুক্তা মণ্ডলের দেহ। আর ঘরের আড়ায় ঝুলছে স্বামী অলোক মণ্ডলের দেহ। মেঝেতে পড়ে রয়েছে রক্তমাখা বটি। খবর দেওয়া হয় জয়পুর থানায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জয়পুর থানার পুলিশ। ঘর থেকে দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। কিন্তু কী কারণে এই হাড়হিম করা ঘটনা ঘটল?
পরিবার সূত্রে জানা যায়, অলোক মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ওষুধ খেলেও মাঝেমধ্যে আচমকাই উত্তেজিত হয়ে পড়তেন। তখনই দাম্পত্যে অশান্তি তৈরি হত বলে খবর। যদিও কিছুক্ষণ পরেই সব আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যেত। স্থানীয় ও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, শুক্রবার রাতে জমিতে আলুবিচ লাগানোর প্রস্তুতির সময় দু’জন আলু বীজ কাটতে কাটতে কোনও কারণে ঝগড়া বাধে। সেই উত্তেজনার জেরে প্রথমে স্ত্রীকে খুন করেন অলোক, পরে নিজের ভুল বুঝে অনুশোচনায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন।
অলোকবাবুর জামাই বিকাশ মণ্ডল বলেন, “স্বামী–স্ত্রী খুব সাধারণভাবে থাকতেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কারও সঙ্গে ঝামেলা ছিল না। শুধু অলোকবাবুর মানসিক অসুস্থতার জন্য মাঝেমধ্যে উত্তেজনা বাড়ত। গতরাতে কী এমন হল বুঝতেই পারিনি। সকালে দরজা না খোলায় সন্দেহ হয়। ভেঙে ঢুকেই দেখি এই ঘটনা।”