আর জি কর দুর্নীতি মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট সিবিআইয়ের, কীভাবে টাকা তুলতেন আখতার? বিস্ফোরক দাবি
প্রতিদিন | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
অর্ণব আইচ: পার্কিং লট হোক, অথবা কাফে। নিজেদের লোকেদের বরাত পাইয়ে দিতে সই জাল করিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ-আখতার আলিরা (Akhtar Ali)। এই কাজে শশীকান্ত চন্দক তাঁদের দোসর ছিলেন বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির মামলার (RG Kar Corruption Case) দ্বিতীয় তথা চূড়ান্ত চার্জশিটে শশীকান্ত চন্দকই বেশিরভাগ সই জাল করেছেন বলে দাবি করেছে সিবিআই। এমনকী, এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে শশীকান্তর সই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়েও পরীক্ষা করিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
গত সোমবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে আর জি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায়(RG Kar Corruption Case) হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি ও শশীকান্ত চন্দকের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট পেশ করেছে। এই চার্জশিটেই সিবিআইয়ের দাবি, সন্দীপ ঘোষ আর জি করে অধ্যক্ষের পদে যোগ দেওয়ার আগেই আফসার আলি খানের সঙ্গে পরিচয় ছিল আখতার আলির। এই আফসার আলি খান পরে সন্দীপ ঘোষের ‘নিরাপত্তারক্ষী’ হিসাবে কাজ করেন ও তাঁর দুর্নীতির দোসর হওয়ার অভিযোগে আফসার আলি খানকে সিবিআই গ্রেপ্তারও করে। আফসার এখন জেলে।
সিবিআইয়ের দাবি, আর জি করে কাফের জন্য অন্তত আটটি সংস্থার কাছ থেকে কোটেশন নেওয়া হয়। তার মধ্যে একটি সংস্থা ছিল আফসারের স্ত্রী নার্গিসের নামে। ওই সংস্থাগুলির কর্তাদের সই জাল করে কোটেশন দেওয়া হয়। প্রত্যেকটি সই শশীকান্ত চন্দকই জাল করেছিলেন বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। এমনভাবে সেগুলি তৈরি করা হয়, যাতে সন্দীপ ঘোষ ও আখতার আলির (Akhtar Ali) ঘনিষ্ঠই কাফের বরাত পান। এমনকী, তিন মাসের বদলে এক বছরের জন্য কাফের বরাত দেওয়া হয়। তার উপর যাতে আফসারের সংস্থা পাঁচ বছরের জন্য কাফের বরাত পায়, সেজন্য আফসারের স্ত্রী নার্গিসের সই জাল করে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, ওই আবেদন ফরওয়ার্ড করেছিলেন দু’জন। তাঁদের নামের পাশে ‘বিধানসভার সদস্য’ উল্লেখ করেছে সিবিআই।
আর জি কর চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়া হত। ওই পার্কিংয়ের বরাতের জন্যও সই জাল করা হয় বলে অভিযোগ। এই ক্ষেত্রেও সন্দীপ-আখতারদের ঘনিষ্ঠ দু’জনকে বরাত পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলে চার্জশিটে দাবি সিবিআইয়ের। আবার বিশেষ ক্ষেত্রে দু’টি সংস্থার ইনভয়েস ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে। আবার কাফের বরাত পাওয়া এক ব্যক্তির সই জাল করে ৯৫ হাজার ৩১৬ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল বলেও সিবিআইয়ের চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। শশীকান্ত চন্দকের সাহায্য নিয়েই দুর্নীতির মাথারা ওই সইগুলি জাল করেন বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। ১৬ ডিসেম্বর আখতার আলির সঙ্গে শশীকান্ত চন্দককেও আদালত হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।