২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর। ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত বাবরি মসজিদের জমিতে রাম মন্দির নির্মাণ এবং পৃথক একটি জমিতে মসজিদ তৈরি হবে। সেই নির্দেশ মেনে অযোধ্যার কাছেই ধন্যিপুরে মসজিদের জমি চিহ্নিত হয়। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা সেই পাঁচ একর জমি আজও খালি পড়ে রয়েছে। জমির ধারে ঝোলানো একটি সাইনবোর্ড। কিন্তু একটি ইঁটও গাঁথা হয়নি ৬ বছর পরেও। ওই জমিতেই একটি ৫০০ শয্যার হাসপাতালও নির্মাণ হওয়ার কথা। তা-ও হয়নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩ বছর পূর্তির দিনে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের (IISF) প্রেসিডেন্ট জুফুর ফারুকি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে মসজিদ তৈরির কাজ শেষ হতে পারে বলে তিনি আশা করছেন।
ওই সংবাদমাধ্যমে তিনি আরও বলেন, ‘মসজিদের সংশোধিত লেআউট ডিসেম্বর মাসে অযোধ্যা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (ADA) কাছে জমা দেওয়া হবে। সেই নকশা অনুমোদন করলে মসজিদের কাজ শুরু হয়ে যাবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৬ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে পারে।’ এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, এডিএ-র কাছে এই মসজিদের নকশা জমা দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি তা খারিজ হয়ে যায়।
গোটা প্রকল্পের মধ্যে মসজিদ ছাড়াও ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল, একটি কমিউনিটি কিচেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-সহ একাধিক নির্মাণের কথা রয়েছে। জুফুর জানিয়েছেন, এই মসজিদের জন্য মোট পাঁচ একর জমি বরাদ্দ হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত কারণে চার একরের মধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে। ফলে, গোটা প্রকল্পের বাকি কাজগুলির জন্যে আশেপাশেই আরও কিছু জমি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যিপুর সাইটের আশেপাশে ‘পর্যাপ্ত জমি’-র অভাব রয়েছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জমি নিয়ে সমস্যা রয়েই গিয়েছে। প্রকল্পের প্রাথমিক নকশা নিয়ে ঐক্যমত না হওয়ায় সেটিকে প্রাথমিক ভাবে বাতিল হয়েছে। মসজিদ নির্মাণের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে আগে নকশা অনুমোদিত হোক, সেটাই চাইছে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন।
এর পাশাপাশি রয়েছে আর্থিক সমস্যাও। ওই সংবাদমাধ্যমে জুফুর জানিয়েছেন, গোটা প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে কমবেশি ৬৫ কোটি টাকা প্রয়োজন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ফাউন্ডেশনের হাতে রয়েছে ৩ কোটি টাকা। জুফুর বলেন, ‘আমাদের হাতে ১০-১৫ কোটি টাকা এলেও এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব। সেই কারণে আমাদের Foreign Contribution (Regulation) Act (FCRA)-এর ছাড়পত্র প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রকল্পের জন্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুদান সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। সেই কারণে বড় অনুদানের আশাতেই রয়েছি আমরা।’
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে আদতে কবে শুরু হবে এই নির্মাণ কার্য? উত্তর নেই ছয় বছর পরেও।