অ্যাম্বুল্যান্স করে যখন সোনালিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন গোটা গ্রামে থিকথিক করছে ভিড়। তিল ধারণের জায়গা নেই। সকলি দেখতে এসেছেন তাঁকে। সোনালির বাড়ির লোকজনও ভিড় সামাল দিতে পারছেন না। শেষমেশ কিছুক্ষণ পরেই সোনালিকে নিয়ে যাওয়া হলো রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন তিনি। আর কয়েকদিনের মধ্যেই ভূমিষ্ঠ হবে তাঁর সন্তান। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই সংবাদমাধ্যমের সামনে সোনালি বললেন, ‘আমার একটাই ইচ্ছা রয়েছে, ছেলে বা মেয়ে যেই আসুক, ওর নাম রাখুক আমাদের মুখ্যমন্ত্রী।’
অন্তঃস্বত্বা সোনালি, তাঁর নাবালক পুত্র এবং আরও চারজনকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করার খবর আসতেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের ছয় বাসিন্দাকে ফিরিয়ে আনার জন্য জানিয়ে পড়ে তৃণমূল। পুরো বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষমেশ দেশের শীর্ষ আদালত রায় দেয়, সোনালিদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
গতকাল রাতে ফেরার পরে ১২ ঘণ্টা মালদা মেডিক্যাল কলেজের ট্রমা কেয়ারে ছিলেন সোনালি। সেখানে থেকে বাড়ি হয়ে ফের হাসপাতাল। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, বর্তমানে সুস্থ আছেন তিনি। শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখা হচ্ছে। অন্তঃস্বত্বা সোনালির যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখছেন চিকিৎসকরা। তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ও আমাদের কাছে একটা প্রস্তাব রেখেছে। ওর সন্তানের যে নাম রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বার্তা আমরা নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাব।’
তবে সোনালির পরিজনরা কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও চিন্তায় রয়েছে তাঁদের পড়শি সুইটি বিবির পরিবার। সুইটি-সহ আরও চারজন এখনো বাংলাদেশে আটকে। কবে তাঁরা ফিরবেন? উত্তর নেই পরিবারের কাছে। দুশ্চিন্তা রয়েই ফিয়েছে সুইটির পরিবারে। সামিরুল বলেন, ‘আজ মুরারাইয়ে সুইটির পরিবারের সদস্য-সহ তাঁর এক নাবালক ছেলের সঙ্গে দেখা করেছি। সোনালির ফিরে আসায় তাঁরা খুশি হলেও, সুইটি এখনও ফিরে না আসায় তাঁদের চোখের জল শুকোয়নি। সোনালির স্বামীও তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন এবং তিনিও প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।’