উড়ান সংকটে সরাসরি হস্তক্ষেপ, টিকিটের দাম বেঁধে দিল কেন্দ্র
বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সকালে যে সব বিমান রুটের ভাড়া ছিল ৫০ কিংবা ৯০ হাজার টাকা, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা নেমে এল ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায়! কারণ, সরকারের নির্দেশিকা। ইন্ডিগো সংস্থার বিমান চলাচলের ব্যাঘাতের জেরে বিগত তিনদিন ধরে দেশজুড়ে উড়ান সংকট ছিল চরমে। তার জেরে গত ৭২ ঘণ্টা ধরেই বিমানের টিকিট পৌঁছে যায় অবিশ্বাস্য দামে। দিল্লি থেকে কলকাতার বিমান ভাড়া শনিবার সকালেও ছিল ৬১ হাজার টাকা। দিল্লি থেকে তিরুবনন্তপুরম ৮৯ হাজার টাকা। এমন পরিস্থিতিতেও কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করছে না কেন? এই অভিযোগ ও ক্ষোভ চরমে ওঠার পর সকালেই ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) প্রকাশ করে দু’টি নির্দেশিকা। প্রথমত, এই অসংখ্য বিমান বাতিল হওয়ার সুযোগ নিয়ে যা ইচ্ছা ভাড়া নেওয়া যাবে না। আর দ্বিতীয়ত, রবিবার মধ্যরাতের মধ্যেই সমস্ত যাত্রীকে টিকিট বাতিলের পূর্ণাঙ্গ ভাড়া ফেরত দিতে হবে। একইসঙ্গে এদিন মধ্যরাতের পর, রবিবার থেকে ইন্ডিগোকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় অসামরিক মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে ভাড়া হবে সর্বাধিক ৭৫০০ টাকা। ৫০০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত রুটে ১২ হাজার টাকা নেওয়া যাবে। তার বেশি নয়। আর ১৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকা। তবে এই ভাড়ার মধ্যে প্যাসেঞ্জার সার্ভিস ফি ও ট্যাক্স নেই। অর্থাৎ প্রকৃত ভাড়া এর থেকে বেশি হবে। তবে এই নিয়ন্ত্রণ ইকনমি ক্লাসের জন্য। বিজনেস ক্লাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কিন্তু এতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হয়। তিন ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত বিমান সংস্থা ভাড়া কমিয়ে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে একই রুটে গত ৭২ ঘণ্টা ধরে যে যাত্রীরা ওই বিপুল মূল্যে বিমানের টিকিট কিনে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হল, তারা কী অপরাধ করল? তাদের ওই বর্ধিত টাকা এয়ারলাইন্সের তো পকেটে চলে গেল। এই মুনাফা করতে দেওয়া হল কেন? সরকার প্রথমদিনেই কেন ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করল না? প্রশ্ন তুলছে কংগ্রেস।
শনিবারও দেশজুড়ে ফ্লাইট বাতিল অব্যাহত ছিল। যদিও দিনের শেষে ইন্ডিগো জানিয়েছে, এদিন ১৩৮টি গন্তব্যের মধ্যে ১৩৫টিতে উড়ে গিয়েছে তাদের বিমান। ১৫০০-এরও বেশি উড়ান সফলভাবে পরিষেবা দিয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৭০০ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এরপরও অবশ্য মন্ত্রকের তরফে সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকের জন্য তলব করা হয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টি মোদি সরকারের সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারেই হয়েছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে। তাদের দাবি, বিমান সংস্থা যে নিয়ম মানছে না এটা সরকার দু’বছর ধরে জানত। কী করা হয়েছে এই দু’বছরে?