• অবহেলায় পড়ে আছে সাঁকরাইলের দুর্গাহুরি ইকোপার্ক
    বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: সাঁকরাইলের দুর্গাহুরি ইকোপার্ক দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। পার্কে একসময় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকত। এখন সন্ধ্যা হলেই সেখানে নেশাড়ুদের আসর বসছে। এহেন পরিস্থিতিতে বনবিভাগের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

    খড়্গপুর বনবিভাগের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, পার্কটির সংস্কারের জন্য প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।

    জেলার অন্যতম পর্যটনস্থল দুর্গাহুরি ইকোপার্ক। পার্কটি খড়্গপুর বনবিভাগের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের অধীনে। বছর পনের আগে ৪০ হেক্টর এলাকাজুড়ে ইকোপার্কটি তৈরি করা হয়। পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পার্কের ভিতরের জলাশয় ও ওয়াচ টাওয়ার। জলাশয়ের ধারে বসার জন্য শেড তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শেডটি ভেঙে পড়েছে। পার্কের ভিতর ঝোপঝাড়ে ভরে গিয়েছে। বনদপ্তরের নথিতে পার্কটি বছর সাতেক ধরে পরিত্যক্ত। বনবিভাগের তরফে পার্ক সংস্কারের জন্য ৫০লক্ষ টাকার প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানো হয়েছিল। তবে, পার্কটির সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে বনবিভাগের কাছ থেকে কোনও স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ওই জলাশয়ে দুই পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তারপর বনদপ্তর জলাশয়টি কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেয়। ঘটনার পর থেকে পর্যটক আসার সংখ্যা আরও কমে গিয়েছে।

    ঝাড়গ্রাম জেলাকে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যটনস্থল সাজিয়ে তুলতে টাকা বরাদ্দ হচ্ছে। অথচ দুর্গাহুরি পার্কটির কেন সংস্কার করা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী এলাকার বাসিন্দা কমল মাহাত বলেন, পার্কটি ঝোপঝাড়ে ভরে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি। আগে এখানে পর্যটক আসায় স্থানীয়দের রোজগার হচ্ছিল। এখন সেসব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যা নামলে পার্কে প্রতিদিন নেশার আসর বসছে। একসময় জনমুখর পার্কটি আজ দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়ে উঠেছে। পার্কটি সংস্কার জন্য বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।

    ঝাড়গ্রাম জেলা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাহুরি পার্ক জেলার গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল ছিল। দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা আসতেন। প্রশাসনের কাছে পার্কটির সংস্কারের জন্য আবেদন করা হবে। পাশাপাশি, পার্কের জলাশয়ে বোটিংয়ের ব্যবস্থা, বাচ্চাদের জন্য খেলনা, বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি রাখার কথাও বলা হবে। পর্যটক টানতে নানা পন্থা নিতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)