• অজয়-দামোদরে আসা পরি‌যায়ী পাখি শিকার রুখতে প্রচারে নামছে বনদপ্তর
    বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সুদীপ পাল, মানকর: রাজ্যের যে সমস্ত জলাধার পরিযায়ী পাখিদের পছন্দ, তার মধ্যে অন্যতম কাঁকসার অজয় ও দামোদর নদ। প্রতি বছর ঠান্ডা পড়তেই দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি এই দুই নদ ও সংলগ্ন জলাধারে উড়ে আসে। শীতকাল কাটিয়ে সেই পাখির দল আবার ফিরে যায় নিজের নিজের দেশে। কাঁকসায় আসা এই পরিযায়ীদের উপর শিকারিদের অত্যাচার বন্ধ করতে এবার আগে থেকেই তৎপর হচ্ছে বনদপ্তর। দুর্গাপুরের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পরিযায়ী পাখি যে অঞ্চলে আসে, সেই এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় প্রচার শুরুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাখিদের যাতে কেউ না মারে সে বিষয়ে সচেতন করা হবে।  

    দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর কাঁকসায় সমীক্ষা করে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির সন্ধান মিলেছিল। তার মধ্যে গ্রে হেরন, পিড কিংফিশার, রুডি সেলডাক, লার্জ ইগ্রেট, লাল রঙের বাহারি বুলুবুল ইত্যাদি ছিল। এবারেও বিভিন্ন ধরনের পাখি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, পরিযায়ী পাখিদের আসা জলাশয়ের উপর নির্ভর করে। সাধারণত জলাশয়ের ৭০ ভাগ পরিষ্কার ও ৩০ ভাগ কচুরিপানা হলে পাখি বেশি আসে। কিন্তু জল কচুরিপানায় ঢেকে থাকলে পাখিরা বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ পায় না। তখনই পাখির আসা কমে যায়। 

    পাখিপ্রেমীরা বলেন, বিশেষ কোনও কারণ না ঘটলে প্রতি বছর পরিযায়ী পাখিরা নির্দিষ্ট সময়ে একই জলাশয়ে ফিরে আসে। কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশ না থাকলে পাখিরা বিকল্প জায়গার খোঁজ করে। তাছাড়া জলাশয়ের দূষণ, মাইকের তাণ্ডব ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে খুব চেনা জায়গাও তারা বদলে ফেলে। সুদীপবাবু জানান, পাখির সংখ্যা, তাদের গতিপ্রকৃতি ও স্বভাব জানার জন্য প্রতি বছর জলাধারে সার্ভে করা হয়। পাখি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে জলাধারের বিভিন্ন অংশ ঘুরে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করা হয়। এবারেও জানুয়ারি মাসে তা করা হবে। পর্যবেক্ষকরা একটি পাখিকে দেখে চিহ্নিতকরণ করেন পাখির নাম, কোন দেশ থেকে এসেছে। সিলামপুর এলাকার বাসিন্দা সুশান্ত বাউরি বলেন, আমলাজোড়া, বামনাবেড়া সহ আমাদের বিভিন্ন এলাকায় শীতকালে নানা ধরনের পাখি আসে। নদীর চর সংলগ্ন এলাকাতেও পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে। ওই সব জায়গায় মানুষের আনাগোনা কম হওয়ায় কোলাহল নেই। তবে, সব পাখির নাম জানি না। কাঁকসার রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম বিদ্যাপীঠের জীবন বিজ্ঞান শিক্ষক প্রিয়ব্রত পান বলেন, পরিযায়ী পাখি ও বন্যপ্রাণীরা বেঁচে থাকলে প্রকৃতি সুন্দর থাকবে। পরিবেশের ভারসাম্য ও বাস্তুতন্ত্র বজায় থাকবে।
  • Link to this news (বর্তমান)