কার সঙ্গে থাকবে স্ত্রী, দাসপুরের রাস্তায় দুই স্বামীর তুমুল হাতাহাতি
বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: এক স্ত্রীর দুই স্বামী। স্ত্রী কার ঘরে যাবেন, তা নিয়েই ব্যস্ততম রাস্তায় দুই স্বামীর মধ্যে তুমুল হাতাহাতি। নাটকীয় এই ঘটনা দেখতে শনিবার একেবারে ভিড় জমে যায় দাসপুর থানার দুবরাজপুরে। শেষে গ্রামবাসীদের মধ্যস্থতায় ওই দুই ব্যক্তি যে, যার বাড়ি ফিরে যান। ওই মহিলার সঙ্গে সামাজিক ভাবে বিয়ে হওয়া দুই স্বামীর এক জনের নাম কৌশিক মাজি। তাঁর ঘাটাল থানার বাড়আনন্দীতে বাড়ি। অন্যজন নন্দদুলাল বেরার বাড়ি দাসপুর থানার গোপালপুর এলাকায়।
ঘাটাল থানার চৌকা গ্রামের বাসিন্দা ওই বধূ। ২০১৭ সালে পেশায় স্বর্ণশিল্পী কৌশিকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মেয়েটির। ২০১৯ সালে তাঁদের এক পুত্রসন্তানও হয়। কৌশিক বলেন, আমাদের সংসার সুখেরই ছিল। আমি যখন কাজের জন্য বাইরে থাকতাম তখন স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে নিয়মিত ভিডিও কলে কথা হত। ২০২৪ সালের শুরু থেকে হঠাৎই সুর কাটে কৌশিকের পরিবারে। তিনি উপলব্ধি করেন স্ত্রী তাঁর সঙ্গে আর ফোনে কথা বলতে চাইছেন না। ফোন করলেও এড়িয়ে যাচ্ছেন। কখনও বা ছেলের হাতে ফোন দিয়ে স্ত্রী কাজে ব্যস্ত হয়ে যেতেন। কেন এমন হত তা প্রথমে বুঝতে পারেননি ওই যুবক। পরে কৌশিক বলেন, পরিবারে টাকার সমস্যা ছিল না। কিন্তু ২০২৪ সালে বাড়ি ফিরে এসে দেখি ছেলে তো নেই-ই, স্ত্রীও বেপাত্তা। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, স্ত্রী নন্দদুলাল নামেএকজনকে বিয়ে করেছে।
কৌশিক বলেন, বারবার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু প্রতিক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছি। শ্বশুরবাড়ির লোকেদের গা-ছাড়া ভাব দেখে থানায় যোগাযোগ করি। থানায় প্রতিনিয়ত এরকম বহু নালিশ জমা পড়ে, এই অছিলা দেখিয়ে পুলিশও কোনও গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ।
স্ত্রীকে ফিরে পেতে ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট কৌশিক আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে নন্দদুলালের বাড়ি ধরনা দেন, তাতেও স্ত্রীর মন গলেনি।
ওই বধূর ছেলে বর্তমানে দুবরাজপুর নেতাজি প্রাথমিক স্কুলে পড়ে। স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে, ছেলেটির বার্থ সার্টিফিকেট অনুযায়ী ভর্তি হয়েছে। ফলে তার বাবার নাম হিসেবে কৌশিকের নাম রয়েছে।
যেহেতু ছেলের বাবা কৌশিক, সেই সুবাদেই তিনি প্রায়ই ছেলেকে দেখতে আসেন। এদিন ছেলেকে দেখতে এসেই স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। কৌশিক সবকিছু ভুলে গিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান স্ত্রীকে। কিন্তু ওই বধূ রাজি হননি। এদিকে স্ত্রীর সঙ্গে কৌশিকের দেখা হয়েছে জানতে পেরেই নন্দদুলাল সেখানে পৌঁছে যায়। এদিন সেখানেই দু’জনের প্রথমে বচসা ও পরে হাতাহাতি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ কর্মকার, গোবিন্দ রানারা বলেন, রাস্তার উপর এভাবে মারপিট দেখতে ভালো লাগছিল না। ওদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই বধূ বলেন, আমি কোনওভাবেই আগের স্বামীর ঘর করব না। এদিকে ওই মহিলার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী নন্দদুলালের দাবি, তিনি পরকীয়া করে বিয়ে করেননি। রীতিমতো অনুষ্ঠান করে সামাজিক ভাবে বিয়ে করেছেন। বর্তমানে তিনি আগেরপক্ষের সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখে রয়েছেন।