• অনলাইন ট্রেডিংয়ের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেপাত্তা, এক লক্ষ টাকায় মাসে ২২ হাজার দেওয়ার টোপ
    বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে ২২হাজার টাকা লভ্যাংশ ফেরত। মাসের শুরুতেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লভ্যাংশ ঢুকে যাবে। ন্যূনতম ১০হাজার টাকা বিনিয়োগ করার সুযোগ ছিল। ফলে নিম্নবিত্ত থেকে চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী কেউই এমন লোভনীয় অফারের সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি। লোভে পড়ে অনেকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এমনকি, জমি বিক্রি করেও অনলাইন ট্রেডিংয়ে টাকা ঢেলেছেন অনেকে। হলদিয়া, সুতাহাটা এলাকার কয়েকশো ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে একটি ট্রেডিং কোম্পানির বিরুদ্ধে। প্রায় ৫০কোটি টাকা হাতিয়ে বেপাত্তা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। শুধু হলদিয়া নয়, পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় ওই সংস্থা শাখা অফিস খুলে টাকা হাতিয়েছে বলে অভিযোগ। সুতাহাটার চৈতন্যপুরে ওই সংস্থার হেড অফিসে এখন তালা ঝুলছে। সুতাহাটা থানায় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

    পুলিশ জানিয়েছে, অনুপ দাসী ট্রেডিং স্ট্যান্ডিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার বিরুদ্ধে সুতাহাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারিত বিনিয়োগকারীরা। ওই সংস্থার মালিক ও তাঁর স্ত্রী সহ পাঁচজনের নামে প্রতারণার অভিযোগ হয়েছে। হলদিয়ার এসডিপিও অরিন্দম অধিকারী বলেন, ওই সংস্থার নামে জেলার বিভিন্ন থানায় অনলাইন ট্রেডিং প্রতারণা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ হচ্ছে। এগরা, চণ্ডীপুরেও অভিযোগ হয়েছে। মামলা শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থার মালিকের বাড়ি চণ্ডীপুর থানার রেয়াপাড়ায়। আত্মীয়তার সূত্রে ২০২৪ সালের ২০মে মাসে চৈতন্যপুরে এসে ট্রেডিং ব্যবসা শুরু করেন। চৈতন্যপুর মোড়ের অদূরে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে একটি ভাড়াবাড়ির দোতলায় অফিস চালু হয়। ৬-৭জন মহিলা কর্মীকে নিয়ে অফিস চালাতেন। ১২-১৪টি ল্যাপটপ নিয়ে মহিলা কর্মীরা ব্যস্ত থাকতেন। ওই সংস্থায় বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন সুতাহাটার কুঁকড়াহাটি এলাকার আনারনগরের বাসিন্দা সুরজিৎ মাইতি। তিনি বলেন, বছরখানেক আগে ওই ট্রেডিং সংস্থার তরফে আমার কাছে বিনিয়োগের লোভনীয় অফার আসে। মাসে ২২শতাংশ লভ্যাংশ মিলবে বলায় ১২লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছি। প্রথমে তিন-চার মাস লাভের টাকা ব্যাঙ্কে ঢুকলেও তারপর থেকে নানা অজুহাতে টাকা আটকে রাখে। পরে লভ্যাংশ সহ বিনিয়োগের টাকা ওই সংস্থা তুলে নিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে। আকুবপুরের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বেকার যুবক সুদীপ্ত হাজরাও সামান্য আয়ের আশায় টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। দ্বারিবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা অসীম সাহু প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। অসীমবাবু হলদিয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কর্মী। নিজস্ব ব্যবসাও রয়েছে। তিনি বলেন, এলাকার বহু মানুষ টাকা বিনিয়োগ করে ঠকেছেন।  • সংস্থার অফিস চৈতন্যপুরে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)