লোন নিয়ে স্বামীকে টোটো, টাকা দিতে না পারায় আত্মঘাতী মহিলা
বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বহরমপুর: স্বামীকে টোটো কিনে দেওয়ার জন্য মাইক্রো ফিনান্স কোম্পানি থেকে লোন নিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে সেই লোনও শোধও করছিলেন। কিন্তু, গত দু’মাস সময়ে তা পরিশোধ করতে পারেননি। তার জেরে বাড়ে চাপ। বারবার কোম্পানির লোকজন বাড়িতে তাগাদা দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। শেষমেশ নিলেন চরম সিদ্ধান্ত। শনিবার সকালে বহরমপুর শহর লাগোয়া মাজদিয়া এলাকায় বাড়ি থেকে মানোহারা বিবির(৪২) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি, ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় লোন প্রদাণকারী সংস্থার কর্মীদের চাপে মানসিক অবসাদে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনায় এদিন পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। বহরমপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এনিয়ে কোনও অভিযোগ হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বছর আগে মানোহারা বিবি প্রায় এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সঠিক সময়ে কিস্তি দিয়ে আসছিলেন। পরপর দু’টি কিস্তি দিতে পারেননি। পরিবারের অভিযোগ, ঋণদাতা সংস্থার পক্ষ থেকে লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সকাল-সন্ধ্যা বাড়িতে এসে অপমান করা হচ্ছিল। টাকা আদায়ের জন্য বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত সংস্থার কর্মীরা বাড়িতে বসেছিল। শুক্রবার দু’বার এসে হুঁশিয়ারি দিয়ে যায়। চরম অপমান করা হয়। এদিন মানোহারার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
মৃতার ছেলে আরিফ শেখ বলেন, শুক্রবার রাতে খেতে বসে মা আমাকে বলে কিছু টাকা জোগাড় করতে। আমি মাকে বলি, সকালে বাইক বন্ধক রেখে টাকা এনে দেব। শনিবার ভোরে বাবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আমি মাকে ডাকতে গিয়ে দেখি, মা ঘরে সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঋণের কিস্তির চাপেই মা আত্মঘাতী হয়েছে। যদিও এই নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের তরফে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযুক্ত কর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।