নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শনিবারও স্বাভাবিক হল না ইন্ডিগো সংস্থার বিমান পরিষেবা। দিনভর অসংখ্য বিমান বাতিল করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের থেকে কয়েক ঘন্টা দেরিতে চলাচল করেছে অনেক বিমান। ফলে গত চার দিনের মতো এদিনও যাত্রীদের ক্ষোভ, অসন্তোষ আছড়ে পড়ল কাউন্টারের সামনে। ফ্লাইট বোর্ড থেকে চোখ সরছে না যাত্রীদের। চেয়ারে বসে থাকছেন আর ঘনঘন তাকাচ্ছেন ফ্লাইট বোর্ডের দিকে। বিমান কখন ছাড়বে, আদৌ ছাড়বে কি না, বাতিল হচ্ছে কি না—এমন নানা আশা-আশঙ্কার দোলাচলে থাকতে হয়েছে তাঁদের। বিমান কর্মী কম থাকার কারণে গত কয়েকদিন ধরে ইন্ডিগো সংস্থার তরফে শয়ে শয়ে বিমান বাতিল করা হচ্ছে। বিস্তর সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। শনিবার কলকাতা বিমানবন্দরে ইন্ডিগো সংস্থার কাউন্টারে দিনভর ছিল উপচে পড়া ভিড়। প্রত্যেকে খোঁজ নিচ্ছেন, তাঁদের নির্দিষ্ট বিমানটি কখন ছাড়বে বা আদৌ ছাড়বে কি না। যদি বিমান বাতিল হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা বিমান সংস্থার তরফে করে দেওয়া হচ্ছে কি? অধিকাংশ যাত্রীরই প্রশ্ন, এত বড় বিপর্যয় ইন্ডিগো সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আগাম কেন আন্দাজ করতে পারেননি? সব মিলিয়ে ইন্ডিগো সংস্থার কাউন্টার যেন বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে! শ্যামসুন্দর আগরওয়াল নামে এক যাত্রীর অভিযোগ, ‘ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠক পূর্বনির্ধারিত রয়েছে। ইন্ডিগোর টিকিট কাটা ছিল। এখন শেষ মুহূর্তে বিমান বাতিল করেছে। এই অবস্থায় আমার ব্যবসার যে বড় ক্ষতি হতে চলেছে, তার দায় কি ইন্ডিগো নেবে?’ ভুক্তভোগী যাত্রীদের আরও বক্তব্য, ‘টিকিটের পয়সা ফেরত দিয়ে দিলেই সব মাফ হয়ে যায় না। এটা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা হঠাৎ ঘটা কোনও দুর্ঘটনা নয়। সংস্থার কর্মী অপ্রতুল, এটা সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা জানেন না, হতে পারে না। কেন তাঁরা আগে থেকে ব্যবস্থা নিলেন না?’ কলকাতা বিমানবন্দরের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন দুপুর পর্যন্ত ইন্ডিগো সংস্থার তরফে ১৫ টি বিমান বাতিল করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের থেকে দেরিতে চলছে আরও ২০টি বিমান। তবে বৃহস্পতি ও শুক্রবার যে বিপুল সংখ্যক বিমান বাতিল এবং দেরিতে চলার ঘটনা ঘটেছিল, তার থেকে কিছুটা হলেও কমেছে শনিবার। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। এখানেই যাত্রীদের বক্তব্য, সোমবার থেকে কর্মব্যস্ত একটা সপ্তাহ শুরু হয়ে যাবে। চাকরি, পড়াশোনা, ব্যবসায়িক কাজকর্ম বা চিকিৎসার প্রয়োজনে কলকাতা থেকে বিভিন্ন শহরে যেতে হবে কত মানুষকে। অন্য জায়গা থেকে কলকাতায় আসবেন অনেকে। ফলে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, আগামী সপ্তাহে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তো?-নিজস্ব চিত্র