• সাম্প্রদায়িক আগুনে দেশকে ধ্বংস করার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে: মমতা, ‘সংহতি দিবসে’ ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যের শপথ তৃণমূলের
    বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসা। বিভাজনের বিরুদ্ধে ঐক্য। শনিবার, ‘সংহতি দিবস’-এর সমাবেশ থেকে এই বার্তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল তৃণমূল।

    এদিন ‘সংহতি দিবস’-এর কর্মসূচি থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও তীব্র করার শপথ নিয়েছেন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি তুঙ্গে তুলতে চাইছে বলে আশঙ্কা জোড়াফুল শিবিরের। এই প্রেক্ষাপটেই ঐতিহাসিক ৬ ডিসেম্বরে (বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন) তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘একতাই শক্তি। বাংলার মাটি একতার মাটি। এই মাটি রবীন্দ্রনাথের মাটি, নজরুলের মাটি, রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের মাটি। এই মাটি কখনও মাথা নত করেনি বিভেদের কাছে। আগামী দিনেও করবে না। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ— বাংলায় সকলে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে জানি। আনন্দ আমরা ভাগ করে নিই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ মমতার আরও সংযোজন, ‘যারা সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বালিয়ে দেশকে ধ্বংস করার খেলায় মেতেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন।’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন, ‘সংহতি দিবসে একতাই হোক মূলমন্ত্র। সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।’

    এদিন ধর্মতলা সংলগ্ন মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ‘সংহতি দিবস’ উপলক্ষে সভার আয়োজন করে তৃণমূলের ছাত্র ও যুব শাখা। সহযোগিতায় ছিল দলের সংখ্যালঘু শাখা। ঘটনাচক্রে এদিনই মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় মসজিদ নির্মাণের শিলান্যাস করেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সেই সূত্রে হুমায়ুনের নাম না করে তাঁকে আক্রমণ করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘বিজেপির একমাত্র এজেন্ডা হল বাংলায় বিভাজন ঘটানো। সেখানে আমাদের কিছু লোক বিজেপিকে সহযোগিতা করছে। এরা হল গদ্দার, মীরজাফর। বিভাজন করেই বিজেপি দেশে ক্ষমতায় থাকতে চায়। বাংলাতেও ধর্মীয় সুড়সুড়ি দেওয়া হচ্ছে মন্দির, মসজিদের নামে। কিন্তু বিভাজন শেষ কথা বলে না। ভারতকে এক রাখার লড়াই আমাদের।’

    সভায় উপস্থিত ছিলেন একাধিক ধর্মগুরু। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, সাংসদ সায়নী ঘোষ, তৃণমূল নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য প্রমুখ। তাঁদের সবারই বক্তব্য, বাংলার শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই হবে আরও তীব্র। মমতা ও অভিষেকের নেতৃত্বে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার স্লোগান উঠেছে এদিনের সভায়। বলা হয়েছে, ‘বিজেপি হল বাংলা জ্বালাও পার্টি। এবার তাদের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে বাংলার জনতা।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)