লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ; নেপথ্যে কি ২০২৬-এর বিধানসভা ভোট?
আজ তক | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
রবিবার কলকাতার ময়দানে চলছে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠান। সকাল থেকেই হাজারে হাজারে হিন্দু ধর্মালম্বীরা ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। দূর জেলা থেকে গাড়ি নিয়ে গতকাল রাত থেকেই ময়দানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বহু মানুষ। সকাল থেকেই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে ময়দান। সকাল ৯ টা থেকেই অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা। তবে ৯-১০টা নাগাদও একের পর এক গাড়ি আসছে। বাস-লরিতে করেও এসে মানুষ যোগ দিচ্ছেন এই অনুষ্ঠানে।
সম্পূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বলে দাবি
‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’-এর তরফে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, এই অনুষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতি মেনেই, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
উপস্থিত থাকতে পারে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব
এই গীতাপাঠ কর্মসূচির সঙ্গে সরাসরি রাজনীতির সম্পর্ক না থাকলেও শনিবার বিকেলে মাঠ পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সূত্রের খবর, গীতাপাঠ শুনতে রবিবার মাঠে হাজির থাকবেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বর্তমান রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের পাশাপাশি উপস্থিত থাকতে পারেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়া আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দিলীপ ঘোষকেও। ফলে মঞ্চে এদিনের সমীকরণ হতে পারে দেখার মতো।
অন্যদিকে, এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আমন্ত্রণপত্র গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছেও। অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেন রাজ্যপালও।
তৃণমূল ও বিজেপির কটাক্ষ
ইতিমধ্যেই গীতা পাঠের অনুষ্ঠান নিয়েও কটাক্ষ পাল্টা কটাক্ষে জড়িয়েছে বিজেপি-তৃণমূল! এই অনুষ্ঠানের ভূমি পুজো ছিল সোমবার। জানা গিয়েছে, সেদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি ঘাসফুল শিবির। বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, যারা হিন্দু, তারা আসবে। যারা হিন্দু নয়, তারা আসবে না। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, "গীতার কথা দিয়েই শুরু করছি।... পোশাক বদল হয়, আত্মা একই থাকে। যারা গেছে তারা কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে গেছে।"
ফলে সব মিলিয়ে ছাব্বিশের আগে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ-এর মতো 'ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান' ঘিরেও রয়েছে রাজনৈতিক হাওয়া। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যে প্রায় ৬৩ শতাংশ হিন্দু ভোট রয়েছে। বিজেপিকে ভোটের ময়দানে নামতে হচ্ছে এই পুঁজি নিয়েই। ফলে এই ভোট একত্রিত করতে মরিয়া পদ্ম শিবির। আর তাই নির্বাচনের ঠিক মাস তিন আগেই একবার 'লিটমাস টেস্ট' করল গেরুয়া বাহিনী। এবার দেখার এর থেকে কী আদৌ কোনও লাভ পাবে বিজেপি? নাকি শেষ হাসি হাসবে তৃণমূলই-উত্তর মিলবে ব্যালট বক্সেই।