নির্দিষ্ট সূচি মেনে কারা পরীক্ষা নিল না, তালিকা চাইল পর্ষদ
আনন্দবাজার | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তাঁদের সূচি অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছিল। যে সবস্কুল ওই সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নেবে না, তাদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে আগেই জানিয়েছিল পর্ষদ। কারা কারা সেই সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নিয়েছে, এ বার তার তালিকা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে চেয়ে পাঠাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই তালিকা দেখে যারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে পরীক্ষা নিয়েছে, সেই সব স্কুলকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এখনস্কুলগুলিতে চলছে তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা। এ বার বেশ কিছু স্কুল জানিয়েছিল, ১ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার কথা পর্ষদ বললেও তারা বাধ্য হয়েই তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা ওই সূচির আগেই শুরু করছে। এরপ্রধান কারণ, এই মুহূর্তে স্কুলগুলিতে শিক্ষকের উপস্থিতির সংখ্যা বেশ কম। অনেক স্কুলেই ওই দশ দিনের মধ্যে পঞ্চম থেকে নবমের পরীক্ষা নেওয়ার পরিকাঠামো নেই।
বেশ কয়েকটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, অনেক শিক্ষক বিএলও-র কাজে চলে গিয়েছেন। ফলে স্কুলে শিক্ষকের উপস্থিতির হার কম। তা ছাড়াও এসএসসি-রএকাদশ-দ্বাদশের ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশের পরে যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষকদের অনেকেই স্কুলে আসছেন না। যাঁরা ইন্টারভিউয়ের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছেন, তাঁরা অনেকেই চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। এই পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়ের আগে থেকে পরীক্ষাশুরু করে দিলে ও বেশি দিন সময় ধরে পরীক্ষা নিলে কম শিক্ষক দিয়ে তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক উতরে দেওয়া যাবে। কিছুটা আগে থেকে পরীক্ষা শুরু করলে ফল বেরোনোর জন্যও অতিরিক্ত সময় পাওয়া যাবে।
কোনও কোনও স্কুল আবার জানিয়েছে, তাদের পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি অথচ শ্রেণিকক্ষ কম,সেখানে ১০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ, ১ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া কঠিন। কারণ স্কুলের একটি বেঞ্চে সাধারণ সময়ে পাঁচ থেকে ছ’জন পড়ুয়া বসে।কিন্তু পরীক্ষার সময়ে সেই বেঞ্চেই তিন জন বা দু’জনের বেশি বসানো হয় না। তাই স্কুলে ১০ দিনের মধ্যে পঞ্চম থেকে দশমেরসবার পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয় না। নির্ধারিত সময়ের একটু আগে শুরু করে ১৩ থেকে ১৪ দিনধরে পরীক্ষা নিলে শ্রেণিকক্ষের সমস্যাটা থাকে না।
যদিও স্কুলের এই যুক্তি মানতে রাজি নয় পর্ষদ। পর্ষদের এক কর্তার মতে, “আগে থেকে পরীক্ষা শুরু করে দেওয়া মানে পড়ুয়াদের ক্লাস কমে যাওয়া। এমনিতেই নানা কারণে ক্লাস কম হয়। এখন ক্লাস কমিয়ে আগে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। আমাদের সূচি অনুযায়ীই পরীক্ষা নিতে হবে।” একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘অনেক স্কুল ডিসেম্বরে টানা ছুটির জন্যে আগে পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে। অথচ আমরা নানা অসুবিধা সত্ত্বেও ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পরীক্ষা নিয়েছি। আমরা জানতে চাই, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা নিলেন না, তাঁদের প্রতি কী ব্যবস্থা নিল পর্ষদ? সেটা প্রকাশ্যে জানানো হোক।’’
কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কলকাতা জেলার ৪১০টি স্কুল জানিয়েছে, তারা কখন তৃতীয় পর্যাক্রমিক পরীক্ষা নিয়েছে। এর মধ্যে চার থেকে পাঁচটি স্কুল নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা নিতে পারেনি। কেন তারা পারেনি, সেই ব্যাখ্যাও তারা দিয়েছে।’’