বাবরির শিলান্যাসের পরই ইউটার্ন হুমায়ুনের! ছাড়ছেন না ভরতপুরের বিধায়ক পদ
প্রতিদিন | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: বহু বিতর্ককে সঙ্গী করেই নিজের জেলায় ‘বাবরি’ মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউটার্ন নিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। রবিবার তিনি জানালেন, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না। কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, ভরতপুরবাসী তাঁকেই বিধায়ক হিসেবে চান। তাঁরাই বারণ করেছেন ইস্তফা দিতে। সেই জনগণের সম্মানার্থে ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। এদিন ব্রিগেডে ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ করে হুমায়ুন ঘোষণা করেন, মুর্শিদাবাদে লক্ষ কণ্ঠে কোরানপাঠ হবে।
দলের সঙ্গে মতানৈক্যের পর গত ১৭ নভেম্বর হুমায়ুন কবীর স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ভরতপুরের বিধায়ক পদ ছাড়বেন। নিয়ম মেনে বিধানসভার স্পিকারের কাছে ইস্তফা দেবেন। এরপর অবশ্য গঙ্গা-পদ্মা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। নিজের জেলায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা করার পর ৩ ডিসেম্বর হুমায়ুনকে দলবিরোধী কাজের জেরে আজীবন সাসপেন্ড করে তৃণমূল। তাতেও অনড় হুমায়ুন গত ৬ ডিসেম্বর, সংহতি দিবসে বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেন। আর তারপরই কার্যত নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন ভরতপুরের বিধায়ক।
এতদিন বলছিলেন, তিনি বিধায়ক পদ দেবেন। রবিবার রেজিনগরে গিয়ে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর এলাকা ঘুরে দেখেন হুমায়ুন কবীর। সেখানেই তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা বললেন, বিধায়ক পদ তিনি ছাড়ছেন না। ভরতপুরের মানুষ তাঁকে বিধায়ক পদ ধরে রাখতে বলছেন। তাঁদের বিভিন্ন কাজে বিধায়ককে দরকার হয়। সেই মানুষের স্বার্থেই তিনি বিধায়ক পদ না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এখন হুমায়ুনের এহেন মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে রবিবার কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে আরএসএস ঘনিষ্ঠ সনাতন সংস্কৃতি পরিষদের তরফে আয়োজিত ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আসরকে চ্যালেঞ্জ করে হুমায়ুন কবীরের ঘোষণা, ছাব্বিশের আগে মুর্শিদাবাদে লক্ষ কণ্ঠে কোরানপাঠ হবে। তাঁর এই ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর মন্তব্য, ”গীতা আমাদের হৃদয়ে আছে, আমাদের আদর্শ। গীতাপাঠের বিরোধী আমরা নই। কিন্তু যাঁরা গীতাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে, আমরা তাঁদের বিরোধিতা করছি। উলটোদিকে, হুমায়ুন কবীরও বাবরি মসজিদের নামে বিষাক্ত সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করেছেন, দলকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি।”