• হুইপ প্রথা বন্ধ হোক, পার্টি লাইনে ভোট দিতে বাধ্য করা যাবে না সাংসদদের, নয়া বিল লোকসভায়
    প্রতিদিন | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসদে ভোটাভুটির ক্ষেত্রে সাংসদদের স্বাধীনতা দেওয়া হোক। এমন ব্যবস্থা চালু হোক, যেখানে পার্টি লাইনের বাইরে গিয়েও ভোট দিতে পারেন সাংসদেরা। হুইপ প্রথা বন্ধের প্রস্তাব দিয়ে লোকসভায় এই বিল পেশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। ঘটনাচক্রে, মণীশ কংগ্রেসের অন্দরে ‘বিক্ষুব্ধ’ বলেই পরিচিত। দাবি, রাহুল গান্ধীর শিবিরের কাছে শশী থারুর যে দোষে দুষ্ট, সেই একই দোষে মণীশও দুষ্ট।

    প্রাইভেট মেম্বার্স বিল হিসাবেই এই বিল পেশ করেছেন মণীশ। তাঁর মত, এমন ব্যবস্থা কার্যকর হলে আদতে আরও স্বাধীনতা পাবেন সাংসদেরা। তাঁরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন। মণীশ চান, পার্টি লাইন যা-ই হোক না কেন, কোনও বিল পছন্দ হলে সাংসদেরা যেন পক্ষে ভোট দিতে পারেন। একই ভাবে, বিল অপছন্দ হলে যাতে বিপক্ষেও ভোট দিতে পারেন সাংসদেরা।

    সংসদে দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে বিভিন্ন সময়েই হুইপ জারি করে থাকে বিভিন্ন দল। এই হুইপ জারির অর্থ হল, নির্দিষ্ট দিনে সাংসদদের সংসদে উপস্থিত থাকা এবং দলীয় লাইন মেনে কর্তব্য পালনের নির্দেশ। বিধানসভাগুলিতেও এই নিয়মই চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। কোনও সাংসদ বা বিধায়ক যদি হুইপ অমান্য করেন, সে ক্ষেত্রে সদস্যপদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই বাধ্যবাধকতা থেকে সাংসদদের মুক্তি দিতে চান মণীশ। তিনি বলেন, “সংসদে কোনও বিল পেল হলে সাংসদেরা যাতে তাঁদের বাস্তববুদ্ধ প্রয়োগ করতে পারেন, তেমনই এক ব্যবস্থার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এই বিলে। নয়তো কিছু সাংসদের ভূমিকা ভীষণ সীমিত। তাঁদের ভোট দিতে বলা হলে, তাঁরা ভোট দেন। ভোট দিতে বারণ করা হলে, তাঁরা ভোট দেন না।”

    ঘটনাচক্রে, বিভিন্ন সময়েই নিজের দল কংগ্রেসের বেঁধে দেওয়া লাইনের বাইরে গিয়েছেন মণীশ। যা নিয়ে দল অস্বস্তিতেও পড়েছে। মণীশ কংগ্রেস ছাড়তে পারেন বলে একাধিক বার জল্পনাও ছড়িয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ‘ভরাডুবি’র পর হাত শিবিরের মধ্যেই বিদ্রোহের সুর চওড়া হয়েছিল। সেই সব ‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস নেতার মধ্যে ছিলেন মণীশও। তিনি দাবি করেছিলেন, কংগ্রেসের এই ভরাডুবির কারণ ইউপিএ সরকারের ব্যর্থতা কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত। শুধু তা-ই নয়, ইউপিএ-তে ‘অন্তর্ঘাত’ হয়েছিল কি না, তা-ও আতশকাচের নীচে আনা দরকার। কংগ্রেসের হারের ‘পর্যালোচনা’র দাবি প্রকাশ্যেই তুলেছিলেন মণীশ। ২০২২ সালে গুলাম নবি আজাদ কংগ্রেস ছাড়ার পরেও মণীশকে নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছিল। অপারেশন সিঁদুরের কথা গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন, মণীশ সেই দলে ছিলেন। সেই সময়েও জল্পনা তৈরি হয় যে, থারুরের মতো তিনিও বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। যদিও এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের ‘হাত’ ছাড়েননি মণীশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)