• রক্তদান ও শীতবস্ত্র নিয়েও তৃণমূলের ‘আমরা–ওরা’ হরিহরপাড়ায়
    এই সময় | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • রবিবার মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া ব্লকের চোঁয়া বিবি পাল বিদ্যানিকেতনের মাঠে রক্তদান শিবির ও শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তৃণমূলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বিশ্বাস ওরফে রাজু। মূলত তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে অনুপস্থিত ছিলেন হরিহরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিয়ামত শেখ। এমনকি বিধায়ক গোষ্ঠীর লোকজনের অনুপস্থিতি ওই অনুষ্ঠানে হাজির তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক থেকে সাধারণ মানুষের চোখ এড়িয়ে যায়নি। ফলে রক্তদান শিবির ও শীতবস্ত্র প্রদানকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে ‘আমরা-ওরা’ প্রকাশ্যে চলে এল!

    ওই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এ দিন সকাল থেকেই এলাকার উৎসাহী সাধারণ মানুষ ভিড় করেন। ছিলেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরাও। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তৃণমূলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বিশ্বাস জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমাজ সেবামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয় এ দিন।

    মূলত শীতের হাত থেকে রেহাই দিতে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ হিসেবে ৮০০ পরিবারের হাতে শীত-পোশাক তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শীতের সময়ে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের আকাল দেখা দেয়। কারণ সারা বছর যাঁরা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন, তাঁরাও এই সময়ে ওই শিবির সে ভাবে করেন না। ফলে রক্তের আকাল দেখা যায় ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে। জানা গিয়েছে, রক্তের আকাল মেটাতে এ দিনের আয়োজিত শিবিরে রক্ত দিয়েছেন প্রায় ৫০০ জন।

    এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান, যিনি জেলার রাজনীতিতে নিয়ামত শেখের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। এখন যে অনুষ্ঠানে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হলো, সেখানে তৃণমূলের ‘আমরা-ওরা’ কোন্দল কী এড়ানো যেত না? সেই প্রশ্নই উঠেছে। এ নিয়ে শামসুজ্জোহা বিশ্বাসকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। হোয়াটস অ্যাপ করা হলেও তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘কোনও কারণে নিয়ামতের গোঁসা হয়েছে রাজুর উপরে। তাই আসেনি। কিন্তু আমি এবং নিয়ামত মঞ্চে থাকলে মানুষের কাছে আলাদা বার্তা পৌঁছত, সেটা হলো না।’

    এ নিয়ে শাসক বিধায়ক নিয়ামত শেখ দাবি করে বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোই হয়নি। ফলে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না।’ নিয়ামতের অভিযোগ, ‘আমার বিধানসভা এলাকা হরিহরপাড়ায় কোনও গোষ্ঠীকোন্দল ছিল না। সেখানেও গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)