নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলা। মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ। সেই ঝামেলা যে স্বামীর ভোটাধিকার টিকিয়ে রাখা নিয়েই সংশয় তৈরি করে দেবে, কে জানত! ঠিক এটাই ঘটেছে কালীঘাটে। অভিযোগ, এখানকার এক মাঝবয়সি ব্যক্তির ইনিউমারেশন ফর্ম লুকিয়ে রেখেছেন তাঁর স্ত্রী। রেখে দিয়েছেন তাঁর অন্যান্য নথিপত্রও। ফর্ম পেতে অগত্যা বিএলও’র দ্বারস্থ হয়েছেন সেই ব্যক্তি। স্বাভাবিকভাবেই ফ্যাসাদে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট বিএলও। এখন কীভাবে বা কোন উপায়ে তাঁকে নতুন ফর্ম দেওয়া সম্ভব বা এক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তর ধন্দে পড়েছেন তিনি।
কালীঘাট অঞ্চলের কালী টেম্পল রোড কলকাতা পুরসভার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ড এবং রাসবিহারী বিধানসভার অন্তর্গত। এখানকার ১০১ নম্বর পার্টের বাসিন্দা চন্দ্রাণী চট্টোপাধ্যায় (নাম পরিবর্তিত)। বেশ কয়েক বছর আগে কালী টেম্পল রোডের বাসিন্দা বিভাস চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে আছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে তাঁদের পারিবারিক ঝামেলা চূড়ান্ত আকার নেয়। যে কারণে বিভাসবাবু এবং চন্দ্রাণীদেবী আলাদা থাকতে শুরু করেন। দুই মেয়ে থাকেন মায়ের কাছেই। জানা গিয়েছে, বিএলও বাড়িতে গেলে দুই মেয়ে সহ তাঁর এবং তাঁর স্বামীর ইনিউমারেশন ফর্ম নিয়েছিলেন চন্দ্রাণীদেবী। কিন্তু স্ত্রী বিভাসবাবুকে কোনও ফর্ম দেননি। ফর্ম বিলি শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও তা না পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘ভোট রক্ষা শিবিরে’ যোগাযোগ করেন তিনি। শিবির থেকে তিনি জানতে পারেন, তাঁর ফর্ম বিলি করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ফর্ম নিয়েছেন। ফর্ম চাইতে গেলে স্ত্রীর সঙ্গে এক দফা ঝামেলাও হয় বিভাসবাবুর। তখন তিনি বিএলও’র দ্বারস্থ হন। কিন্তু একবার ফর্ম দিয়ে দেওয়ার পর নতুন করে কীভাবে আবার তা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে ফ্যাসাদে পড়েন বিএলও। তবে এ প্রসঙ্গে বিএলও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এসআইআর পর্বে নানা ধরনের পারিবারিক ঝামেলা সামনে আসছে। এর আগে পারিবারিক ঝামেলার কারণে একজন জীবিত ভোটারের নাম উধাও হয়ে যেতে বসেছিল। পরিবারের এক সদস্যই তাঁকে মৃত বলে চালিয়ে দিয়েছিলেন। এবার দেখা গেল, দাম্পত্য ঝামেলা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে স্বামী ভোটাধিকার হারাতে বসেছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘ওঁরা দু’জন এখন আর একসঙ্গে থাকেন না। স্ত্রী ফর্ম নিয়ে লুকিয়ে রেখেছেন। ভদ্রলোক এখন ফাঁপরে পড়ে আমাদের কাছে এসেছেন। আমরা ওঁর স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করছি, যাতে উনি ফর্মটি দিয়ে দেন বিভাসবাবুকে। তেমন হলে বিএলও নিজেও কথা বলতে পারেন। কোনও যোগ্য ভোটারের নাম যেন বাদ না যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’