নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সিঁথিতে সোনার অলংকার তৈরির কারখানায় ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল শ্যালক ও ভগ্নীপতি। এর জন্য উত্তরপ্রদেশ থেকে দুষ্কৃতী ভাড়া করেছিল শ্যালক ইসরাইল। ভাড়াটে দুষ্কৃতীকে লুট করা সামগ্রীর একাংশ দেওয়ার কথা ছিল। বেঙ্গালুরু থেকে ধৃত ভগ্নীপতি মাসুম বাবু মল্লিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ঘটনাস্থলের কাছেই নিজের পরণের গেঞ্জি বদলে ফেলেছিল মাসুম।
অক্টোবর মাসে সিঁথি এলাকার রাজা অপূর্ব কৃষ্ণ লেনে সোনার গয়না তৈরির কারখানা থেকে ২ কেজি ৩৮০ গ্রাম সোনা ডাকাতি হয়ে যায়। এক দুষ্কৃতী কারখানার কর্মী সঞ্জিতকুমার দাসের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে রাখে। অন্য দুষ্কৃতী বাইক সমেত সোনা নিয়ে চম্পট দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি গেঞ্জি উদ্ধার করে। কিন্তু সেটি কার জানা যায়নি তখন। ঘটনার তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখার গোয়েন্দারা খানাকুল থেকে সইদুল নামে দোকানের এক প্রাক্তন কমীকে গ্রেফতার করে। পরে গ্রেফতার হয় মাসুম। ইসরাইল ও ভিন রাজ্যের ভাড়াটে দুষ্কৃতী এখনও পলাতক।
সইদুলকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, গোটা ঘটনার পিছনে রয়েছে ইসরাইল নামে এখানকারই এক প্রাক্তন কর্মী এবং তার ভগ্নীপতি মাসুম। ইসরাইল কাজ ছাড়ার কিছুদিন পর এই কারখানা ছেড়ে অন্যত্র কাজ নিয়েছিল সইদুল। তবে দু’জনের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। তদন্তে উঠে আসে, ইসরাইল ও মাসুম বাবু এই দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। লুট করা সোনা দিয়ে তারা নিজস্ব জুয়েলারি দোকান খোলার পরিকল্পনা করেছিল। পরিকল্পনার কথা জানানো হয় সইদুলকে। সে তাদের প্রস্তাবে সাড়া দিলে কয়েকদিন রেকি করে দেখে নেওয়া হয়, কে কখন সোনা নিয়ে আসছে। খোঁজখবর করে তারা জানতে পারে, উৎসবের মরশুম চলায় প্রতিদিনই ভালো পরিমাণ সোনার বিস্কুট ঢুকছে দোকানে। ইসরাইল এই ডাকাতির জন্য আব্বাস নামে উত্তরপ্রদেশের এক দুষ্কৃতীকে ভাড়া করে। তাকে বলা হয়, ডাকাতির পর সোনার ভাগ পাবে সে। টাকাও তাকে দেওয়া হবে। জেরায় মাসুম তদন্তকারীদের জানিয়েছে, সে ও তার শ্যালক মিলে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার পর আব্বাসকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। আব্বাস দোকানের কর্মীর বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে। ইসরাইল বাইকে সোনা নিয়ে পালায়। মাসুম হেঁটে কিছুটা দূরে গিয়ে দেখে, আর রাস্তা নেই। তখন পরণের সবুজ গেঞ্জি খুলে ফেলে দেয়। তার নীচে থাকা কালো গেঞ্জি পরেই সে ভিড়ের সঙ্গে মিশে পালায়।