দার্জিলিং সহ গোটা উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় এখন দারুণ আবহাওয়া। অনেকটাই নেমে গিয়েছে তাপমাত্রার পারদ। কিছু কিছু জায়গায় তো পারদ ৫ ডিগ্রির তলায় চলে গিয়েছে বলে খবর। আর এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই উত্তরবঙ্গমুখী হচ্ছেন। তবে সেই কাজটা করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বাধা হয়ে যাচ্ছে বড় গাড়ির স্পেশাল পারমিট বাতিলের সমস্যা।
আসলে শীতের মরসুমে অনেকেই বাসে করে যান পাহাড়ে। তবে সেখানেই বিপত্তি দেখা দিতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, এই সময় যানজট এড়াতে চাইছে দার্জিলিঙের প্রশাসন। তাই তাদের পক্ষ থেকে বাস সহ কিছু বড় গাড়িকে স্পেশাল পারমিট দেওয়া হচ্ছে না। আর দার্জিলিং আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এই সিদ্ধান্তেই খারাপ অবস্থা বাস মালিক এবং সাধারণ মানুষের। দুই দলই এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে।
বাস মালিকদের বক্তব্য, বছরের এই সময়টায় একটু বেশি আয় হয়। এমন পরিস্থিতিতে স্পেশাল পারমিশন না দেওয়ায় আদতে কমবে আয়। যার ফলে তাদের সমস্যা হতে পারে।
ও দিকে পর্যটকদের একাংশের দাবি, ছোট গাড়ি ভাড়া করতে অনেক বেশি টাকা লাগে। বড় বাসে অনেক যাত্রী ধরে। ফলে খরচ পড়ে কম। যেই কারণে বাসই ভাড়া করা শ্রেয়। তবে এখন সেই আশা আর নেই। কারণ, স্পেশাল পারমিট বন্ধ করে দিয়েছে দফতর। তাতে আদতে খরচ বাড়বে বা যাওয়া বন্ধ করতে হবে।
কাদের সমস্যা বেশি?
সাধারণত, যেই সব বাসগুলি দার্জিলিঙে ইতিমধ্যে যায়, তাদের নিয়ে চিন্তা নেই। তবে যেই সব বাসের সেখানে স্পেশাল পারমিট লাগে যেতে, তাদের নিয়েই যত সমস্যা।
সহজ ভাষায় বললে, এই সিদ্ধান্তের ফলে যারা উত্তরবঙ্গের নীচের দিকে থাকেন, এই সময় পিকনিক করতে যেতে চান পাহাড়ে, তাদেরই সমস্যা বাড়ল। তাদের এখন থেকে বাড়তি টাকা খরচ করে ছোট গাড়ি ভাড়া করে পাহাড়ে যেতে হবে। অন্যথায় যাওয়ার ইচ্ছে ভুলতে হবে।
যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে একাধিক বাস সংগঠন। উত্তর দিনাজপুর বাস ও মিনিবাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সরাসরি পরিবহণমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্লাবন প্রামাণিক জানিয়েছেন, স্পেশাল পারমিট বন্ধের বিষয়ে কোনও স্পষ্ট লিখিত নির্দেশ এখনও তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। আঞ্চলিক দফতর থেকে শুধু মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে যে পারমিট দেওয়া হবে না। কেন এমন সিদ্ধান্ত, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে বাস মালিকদের মনে। তাই পুরো বিষয়টি জানিয়ে তাঁরা মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন, যাতে দ্রুত সমাধান হয়।
অবশ্য উত্তর দিনাজপুর আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সুশান্ত অধিকারী অবশ্য আশার আলো দেখাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছে, দার্জিলিঙের দফতরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মৌখিকভাবে আশ্বাসও মিলেছে। তার ফলে দ্রুত সমস্যা দ্রুত মিটে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।