পুণে থেকে পড়াশোনা করেও লাভ হয়নি, আজীবন ‘পার্শ্বচরিত্র’ হয়েই থাকলেন কল্যাণদা, আফসোস রত্নার
আনন্দবাজার | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
আফসোস করছেন আর এক বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল। “গত দু’বছর ধরে কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না। অথচ, উনি আক্ষরিক অর্থেই ‘দাদা’ ছিলেন।”
দীর্ঘ রোগভোগের পর রবিবার রাতে বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। “দাদার সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ‘এখানে পিঞ্জর’ ছবিতে। যাত্রিক গোষ্ঠীর পরিচালনায় ছবিতে আমি কল্যাণদার বোন। এই সম্পর্ক আজীবন ধরে রেখেছিলেন”, গলা ভার রত্নার। এখন নন্দন প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হচ্ছে ছবিটি। সেই সময়ে বাংলা বিনোদনদুনিয়া যেন একটি পরিবার। কাজের অবসরে কিংবা কাজের শেষে সকলে মিলে আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরতেন। সেই সব দিন নতুন করে মনে পড়ছে রত্নার।
বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর মনে আছে, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে কল্যাণ, তিনি এবং তাঁদের সমসাময়িক অভিনেতারা একসঙ্গে ছবি দেখতে যেতেন। আড্ডা দিতেন চা-মুড়ি সহযোগে। কল্যাণদার অমায়িক আচরণই তাঁকে উত্তমকুমার, সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহ, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের মতো খ্যাতনামীদের প্রিয়পাত্র করে তুলেছিল। “আমার সঙ্গে দেখা হলেই সবার আগে পরিবার, সংসার, কাজের খবর নিতেন। শরীরের যত্ন নিচ্ছি কি না—বড় দাদার মতোই জানতে চাইতেন। এটা কল্যাণদা সকলের সঙ্গেই করতেন।” অভিনয়ের পাশাপাশি এই দিকটাও মনে রেখে দেবেন অভিনেত্রী।
জয়া বচ্চনের সঙ্গে পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাবড় অভিনেতা, পরিচালকদের ছবিতে ছিলেন। কিন্তু কেউ তাঁকে প্রধান চরিত্রে ভাবেননি! প্রাতিষ্ঠানিক শংসাপত্র কি প্রয়াত অভিনেতার মূল্য নির্ণয় করতে পারল? “আমাদের এখানে কোনও দিন প্রাতিষ্ঠানিক শংসাপত্রের মূল্যায়ন হয়েছে?” পাল্টা প্রশ্ন তুললেন রত্না। তাঁর কথায়, “শেষ দিন পর্যন্ত ‘পার্শ্বচরিত্র’ হয়েই থেকে গেলেন। পুণে থেকে ছবি নিয়ে এত পড়াশোনা মূল্যই পেল না! বড় বড় পরিচালকেরাও তাঁকে প্রধান চরিত্রে ভাবতে পারলেন না। এই দুঃখ কল্যাণদারও ছিল।”