‘বাংলার চা’ খাওয়ানো হবে এবার মোদির রাজ্যে, উদ্যোগী টি বোর্ড, গুজরাতে প্রচারে হবে রোড শো
বর্তমান | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বাংলার চা এবার খাওয়ানো হবে মোদির রাজ্যে! উদ্যোগী টি বোর্ড। উত্তরবঙ্গের বিশেষ করে ডুয়ার্সের চায়ের ঐতিহ্য তুলে ধরতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বাজার ধরাও অন্যতম টার্গেট। মূলত ক্ষুদ্র চা চাষিদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে টি বোর্ড। ঠিক হয়েছে, শীঘ্রই বাংলার চায়ের প্রচারে গুজরাতে রোড শো হবে। সেখানকার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে ‘চায়ে পে চর্চা’। ডুয়ার্স চায়ের দেড়শো বছরের ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি এখানকার চা খাওয়ানো হবে মোদির রাজ্যের বাসিন্দাদের।
গুজরাতের পাশাপাশি ডুয়ার্স চায়ের ব্র্যান্ডিংয়ে রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রে রোড শো করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন টি বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর কমলচন্দ্র বৈশ্য। বলেন, ডুয়ার্স চায়ের ব্র্যান্ডিংয়ে আমরা লোগো দিয়েছি। এবার প্রচারে জোর দেওয়া হবে। গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র সহ বিভিন্ন রাজ্যে উত্তরবঙ্গের চা যাতে ভালো বাজার পায়, তার চেষ্টা চলছে। ওইসব রাজ্যে আমরা শীঘ্রই রোড শো করার কথা ভাবছি।
টি বোর্ডের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিস্টা) সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, স্বাদে-গুনে অনেক উন্নত হওয়া সত্ত্বেও ডুয়ার্স চায়ের নিজস্ব পরিচিতি নেই। দীর্ঘদিন ধরে মূলত অসম চায়ের ‘ফিলার’ হিসেবে ডুয়ার্স চা বিক্রি হয়ে আসছে। টি বোর্ড গুজরাত, রাজস্থান কিংবা মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে উত্তরবঙ্গের বিশেষ করে ডুয়ার্স চায়ের বাজার ধরতে প্রচারের উদ্যোগ নিলে আমরা অবশ্যই সঙ্গে থাকব।
রবিবার রানিনগরে জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা হয়। সেখানে প্রশ্ন ওঠে, নিলামে যেখানে অসম চা ২২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে ডুয়ার্স চা ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হবে কেন? ডুয়ার্সের চায়ের ব্র্যান্ডিং করতে টি বোর্ড কেন হাতগুটিয়ে বসে আছে? এরই প্রেক্ষিতে টি বোর্ডের শিলিগুড়ির ডেপুটি ডিরেক্টর (চা উন্নয়ন) কমলচন্দ্র বৈশ্য বলেন, ডুয়ার্স চা যাতে দেশীয় বাজার ধরতে পারে, সেজন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। কিন্তু তার আগে নিরাপদ চা উৎপাদনে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। তাঁর দাবি, গত কয়েকমাসে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন টি ফ্যাক্টরি থেকে আমরা চায়ের প্রায় সাড়ে তিনশো নমুনা সংগ্রহ করেছি। এরমধ্যে কিছু চায়ে ক্ষতিকর কীটনাশকের অবশিষ্টাংশের উপস্থিতি মিলেছে। তাদের সতর্ক করা হয়েছে। তাছাড়া ক্ষুদ্র চা বাগানগুলিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভাড়া করা লোক দিয়ে মেশিনের সাহায্যে পাতা তোলা হচ্ছে। এতে ৪৫ দিন বয়সি চা পাতা তোলা হচ্ছে, এমন বাগানেরও খোঁজ মিলেছে। বাগানে ১১-১২ দিনের ব্যবধানে কাঁচা পাতা তোলার নিয়ম। বেশি বয়সি পাতা তোলার কারণে চায়ের গুণগতমান কমছে।
টি বোর্ডের অভিযোগ মেনে নিয়ে ক্ষুদ্র চা বাগান মালিকদের সংগঠনের সভাপতি বলেন, কিছু বাগানে এখনও কম-বেশি ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা এনিয়ে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছি।