আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার রাতে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকার মঙ্গলজোন গ্রামে আত্মঘাতী হলেন এক সহকারী বিএলও। তবে কী কারণে ওই সহকারী বিএলও আত্মঘাতী হয়েছেন তা নিয়ে ধন্ধ ছড়িয়েছে।
মৃত ওই সহকারী বিএলও-র কাজের চাপ ছিল, না কি পারিবারিক কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন সেই বিষয়ে তাঁর পরিবার মুখ খুলতে চায়নি।
তাঁর দেহ উদ্ধার করে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে ময়নাতদন্তের শেষে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন গোটা বিষয়টি নিয়ে কারুর বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন কি না। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই সহকারী বিএলও-র নাম বাদশা শেখ (২৯)। তিনি রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত বান্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সোমবার সকালে বাদশা ঘুম থেকে না ওঠায় তাঁর পরিবারের লোকেরা খুঁজতে গিয়ে ঘরের মধ্যে গিয়ে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান।
মাত্র ১১ মাস আগে বাদশা শেখের বিয়ে হয়েছিল বলে তাঁর পরিবার সূত্রের খবর। রবিবার রাতে ওই যুবক যখন আত্মঘাতী হন সেই সময় তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। সঞ্জয় ঘোষ নামে বাদশা শেখের এক সহকর্মী বলেন," শনিবার বাদশা স্কুলে সঠিক সময়ে এসেছিলেন এবং কাজ করেছিলেন। ওঁর কোনও সমস্যা রয়েছে বলে আমরা জানতাম না। হঠাৎ করেই আজ খবর পাই বাদশা আত্মঘাতী হয়েছেন। কী কারনে সে এই চরম সিদ্ধান্ত নিল আমরা বুঝতে পারছি না।" মৃত ওই যুবকের ভাই রাজা শেখ বলেন," আমার দাদা গ্রামে সহকারী বিএলও হিসেবে কাজ করছিলেন। দাদার কাজের চাপ ছিল কি না আমি জানিনা। কী কারনে দাদা আত্মহত্যা করল তা আমরা বুঝতে পারছি না।"মৃত ওই শিক্ষকের অপর এক সহকর্মী জানান ,"গত কয়েক দিন ধরে বাদশা নিজের গ্রামের একটি বুথে সহকারী বিএলও হিসাবে কাজ করছিলেন। রাজ্য জুড়ে এসআইআর শুরুর সময় থেকে তাঁকে এই কাজে নিয়োগ করা হয়নি। পরবর্তীকালে বিএলও-র কাজের সুবিধার জন্য বাদশাকে নিজের গ্রামে সহকারী বিএলও হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল।" ওই শিক্ষক জানান,"গত শনিবারও বাদশা নিয়ম মতো স্কুলে এসেছিলেন এবং পরীক্ষার খাতা দেখেছেন। আমরা শুনেছি ইতিমধ্যেই তিনি সহকারী বিএলও হিসেবে নিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজও শেষ করেছেন। কিন্তু তারপরও কী কারণে এই আত্মহত্যা তা আমরা বুঝতে পারছি না।" প্রসঙ্গত গত ৪ নভেম্বর রাজ্য জুড়ে এসআইআর শুরু হওয়ার পর থেকে একাধিক ব্যক্তি ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যেতে পারে এই আশঙ্কায় আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলারও একাধিক ভোটার রয়েছেন। এর পাশাপাশি বিএলও হিসাবে কাজের চাপ সামলাতে না পেরে আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি।
বিএলও হিসাবে কাজ করার জন্য 'অতিরিক্ত চাপ' দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে নদিয়া জেলায় এক মহিলা ইতিমধ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন। বিএলও-র কাজের চাপ সামলাতে না পেরে সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানা এলাকায় এক বিএলও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। এই আবহে মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জে এক সহকারী বিএলও-র আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এই জেলায়।