• প্লাস্টিক দিলে মিলবে খাবার, তাও বিনে পয়সায়! কোথায়
    আজকাল | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে অভিনব উদ্যোগ। পড়ে থাকা প্লাস্টিক কুড়িয়ে দিলেই মিলবে নিখরচায় খাবার। আবর্জনা মুক্ত হবে শহরও। অভিনব উদ্যোগ নিল ভদ্রেশ্বর পুরসভা। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসীরাও। 

    শহরকে পরিষ্কার রাখতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হয় পুর কর্তৃপক্ষকে। আবর্জনা মুক্ত রাখার দায়িত্ত্ব পালন করেন পুরসভার কর্মীরা। এই কাজের জন্য প্রতিটি পুরসভায় নিদিষ্ট দপ্তর আছে। কিন্তু তা সত্বেও, সচেতনতার অভাবে শহরকে আবর্জনা মুক্ত রাখা সম্ভব হয় না। সেই কথা মাথায় রেখেই শহরকে আরও পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে নতুন উদ্যোগ নিল  ভদ্রেশ্বর পুরসভা। বর্জ্য প্লাস্টিকের বিনিময়ে বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হবে মা ক্যান্টিনের মাধ্যমে। 

    ভদ্রেশ্বরে জুটমিল এলাকায় একাধিক কলোনি-সহ বিভিন্ন বস্তি রয়েছে। তাছাড়া বহু মানুষ রাস্তা ঘাটে ও বাড়ির আশেপাশে যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলে দেন। তাই শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যানার দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এক কেজি বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে দুটি খাবারের কুপন ও দু’কেজি বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে পাঁচটি খাবারের কুপন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভদ্রেশ্বর পালবাগানে পুরসভা লজে মা ক্যান্টিন থেকে এই প্লাস্টিকের বিনিময়ে খাবার দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হবে। 

    সোমবার মা ক্যান্টিনে প্লাস্টিকের বিনিময়ে খাবার নিতে আসা একজন বলেন, “এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। তাঁর মতো যারা পাঁচ টাকার বিনিময়ে মা ক্যান্টিন থেকে খাবার পেয়ে থাকেন, তাঁরা রাস্তাঘাটে পরে থাকা প্লাস্টিক জমা দিয়ে খাবার পেতে পারেন। একটু চেষ্টা করলে এক কেজির বা দু’কেজি প্লাস্টিক জোগাড় করতে পারবেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের উচিত রাস্তায় বা ড্রেনে প্লাস্টিক না ফেলে একটা নিদিষ্ট জায়গায় জমা করা। দু’ তিন দিন অন্তর তাঁরা সেটা সংগ্রহ করে মা ক্যান্টিনে আনলে বিনা পয়সায় খাবার পাবেন। এটা অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ।”

    এই প্রসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান প্রলয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গত তিন বছর ধরে মা ক্যান্টিন চলে আসছে। গৃহহীন ও ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়। ভদ্রেশ্বর শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য পুরসভা নিজস্ব লোক আছে। তা ছাড়াও বর্জ্য প্লাস্টিকের বিনিময়ে বিনামূল্যে খাবারের কুপন দেওয়া হচ্ছে। মা ক্যান্টিনে পাঁচ টাকার বিনিময়ে ডিম ভাত সোয়াবিনের তরকারি দেওয়া হয়। সেই পাঁচ টাকাও যারা দিতে পারছেন না, তাঁদের জন্য পুরসভার তরফে এই নতুন স্কিম চালু করা হল। 

    তিনি আরও জানান, প্রত্যেকের বাড়িতে বা আশেপাশের অনেক প্লাস্টিক পরে থাকে। সেই বর্জ্য প্লাস্টিক ৫০০ গ্রাম দিলেই একটি করে খাবারের কুপন দেওয়া হবে। ভদ্রেশ্বর শহর ও সমাজের জন্য কিছুটা শ্রম দিলে বিনা মূল্যে এই খাবার পাওয়া যাবে। এটাতে নিজের বাড়ি ও সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার রাখার লক্ষ্যেই এই চিন্তাভাবনা। সারাদিন মানুষ জীবিকা অর্জনের জন্য অনেক কিছুই করে থাকেন। সমাজ পরিষ্কার রাখতে একটু ঘুরলেই পাঁচশো বা এক কেজি প্লাস্টিক জোগাড় করা কোনও ব্যাপার না। শহর পরিষ্কার রাখা সকলেরই কর্তব্য। সেই জায়গা থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)