আজকাল ওয়েবডেস্ক: খড়গপুর আইআইটির গবেষক ছাত্র শ্রবণ কুমার-এর (২৭) অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাতে তাঁকে রেললাইনের ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। দ্রুত উদ্ধার করে তাঁকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার রাতে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শ্রবণ আইআইটি খড়গপুরের মেঘনাদ সাহা হলের আবাসিক ছিলেন। তাঁর বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুরে। ঘটনার পরপরই পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। শ্রবণের শরীরে কোনও ট্রেনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে কি না, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত তৈরি হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এখনও এই ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথমে এটিকে দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও, পরবর্তী সময়ে নানা দিক খতিয়ে দেখতে বিষয়টি নিয়ে আরও গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। বিশেষত, কীভাবে শ্রবণ কুমার রেললাইন পর্যন্ত পৌঁছলেন এবং কী কারণে তিনি সেখানে ছিলেন, এসব প্রশ্ন উঠেছে।
আইআইটি খড়গপুর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে শ্রবণ কুমার কোথায় ছিলেন এবং কেন তিনি আবাসিক হল থেকে বেরিয়েছিলেন, তা এখনও তাঁদের কাছে স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর আগে তাঁর কোনও ধরনের মানসিক চাপে থাকার সম্ভাবনা বা অন্য কোনও ব্যক্তিগত কারণ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্যও পুলিশ তৎপর রয়েছে।
পুলিশ জানায়, তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং ঘটনাটির সব দিক খতিয়ে দেখছে। তবে খুনের সম্ভাবনা এখনও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। এদিকে, এই ঘটনায় গবেষক মহল-সহ আইআইটি খড়গপুরের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমেছে।
চলতি বছরে গত মে মাসে খড়গপুর আইআইটির মদনমোহন মালব্য হলের এসডিএস ১৩৫ নম্বর রুম থেকে এক ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত ছাত্রের নাম, মহম্মদ আসিফ কামার। তাঁর বাড়ি বিহারের শিওহর জেলায়। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে তাঁর রুমের দরজা বন্ধ ছিল। সন্দেহ হওয়ায় তাঁর সহপাঠীরা দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। সাড়া না পেয়ে সহপাঠীরা কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রবিবার ভোরবেলায় ওই ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আইআইটি খড়গপুর চত্বরে।
এর আগে এপ্রিল মাসে আইআইটি খড়গপুরের ছাত্রাবাস থেকে পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর কারণ নিয়ে স্পষ্টভাবে এখনও কিছুই জানায়নি আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ। খুন না কি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অনিকেত ওয়ালকার। ওশেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নভেল আর্কিটেকচার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। অনিকেতের বাড়ি মহারাষ্ট্রে। আইআইটি খড়গপুরের হস্টেলেই তিনি থাকতেন।
গতকাল, রবিবার রাতে জগদীশচন্দ্র বসু হলে ২১৪ নম্বর রুম থেকে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, পড়াশোনার চাপে ওই ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।