গরুর দুধ দিয়ে বানান হয়েছিল প্রসাদ। সেই প্রসাদ খেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তবে তার পরের দিনই মারা যায় সেই গরু। কুকুর কামড়ানোর ফলেই গরুটা মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ। আর সেই কারণেই গ্রামবাসীরা দ্রুত দৌড়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জলাতঙ্কের টিকা নিতে। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের দেবরার পাসঙ্গ গ্রামের।
কী হয়েছিল?
যতদূর খবর, গরুর দুধ দিয়ে প্রসাদ বানানো হয়েছিল। সকলেই সেই প্রসাদ ভক্তি ভরে খেয়েছিলেন। কিন্তু পরের দিনই মারা যায় গোরুটি। যার ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের দেবরার পাসঙ্গ গ্রামে আতঙ্ক তৈরি হয়। সকলেই ছোটেন জলাতঙ্কের টিকা নিতে। লম্বা লাইন পড়ে যায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে। ২২২ জনকে ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে টিকা। যদিও বড় খবর হল, গরুটি আদৌ জলাতঙ্কের জন্য মারা গিয়েছে কি না, সেটাই এখনও পরিষ্কার নয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারের পূর্ণিমা পুজো হয়েছিল। সেই পুজোয় গরুর দুধ দিয়ে প্রসাদ তৈরি করা হয় ঋষিকেশ মাইতির বাড়িতে। সেই বাড়িতে অনেকেই এসে প্রসাদ খান। তবে সেই রাতেই গরুর শরীর খারাপ হয়। তখন হৃষীকেশবাবু ডাক্তারকে ডাকেন।
পরের দিন সকালে তিনি স্থানীয় ডেয়ারি ফার্মকে গোটা বিষয়টা জানান। সেখান থেকে পশু চিকিৎসক সেই গরুটাকে দেখে এবং বলে গরুটার জলাতঙ্ক হয়েছে। তারপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এর মধ্যে শুক্রবার মারা যায় গরুটি।
আসলে গরুর দুধ অ্যাসোসিয়েশনকে বেঁচতেন ঋষিকেশ। আর গ্রামবাসীরাও সেখান থেকে নিতেন দুধ। যার ফলে অনেক মানুষই খেয়েছেন সেই গরুর দুধ। আর জলাতঙ্ক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরই প্রথমে মাইতি পরিবারের ১১ জন দেবরা হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে নিয়ে নেন টিকা। এরপরই গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারাও সেখানে গিয়ে ওষুধ কিনে নেন।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, তারাও হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তারা সেই দুধ দিয়ে রাম পূর্ণিমার প্রসাদও বানান। যদিও এখনও সেই গোরুর দুধ দিয়ে যে জলাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবুও গ্রামবাসীরা পৌঁছে গিয়ে ব়্যাবিস টিকা নিয়েছেন।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোবিন্দ সামাই জানান, ঋষিকেশবাবুর গরুর ছিল। সেই গরুর দুধ অনেকেই খেয়েছে। আর সেই গোরুকে একটা কুকুর কামড়ে ছিল। তারপর গরুটি মারা যায়। তারপরই সবাই টিকা নিতে ছোটে বলে জানা গিয়েছে।
জেলার চিফ মেডিক্যাল অফিসার অব হেলথ সৌম্যশঙ্কর সারাঙ্গি বলেন, 'গ্রামবাসীরা খুবই আতঙ্কে রয়েছে এবং দেবরা হাসপাতালে জড় হয়েছিলেন শনিবার। তাদের বোঝান যায়নি। সেই কারণেই সকলকে টিকা দেওয়া হয়েছে।'