'আমার তো একটা নীতি আছে...', কেন গীতা পাঠের আসরে যাননি? উত্তর দিলেন মমতা
আজ তক | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
রবিবার কলকাতার ব্রিগেড গ্রাউন্ডে '৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ' হয়েছে। হিন্দুদের সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তবে তিনি যাননি। সেই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
সোমবার কোচবিহার যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে গীতা পাঠের কর্মসূচিকে বিজেপির অনুষ্ঠান বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর দাবি, অনুষ্ঠানটা বিজেপির, সেই কারণে তিনি অংশ নেননি। নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান হলে যেতেন। কিন্তু বিজেপি এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তাই তিনি যাননি। গেলে সেটা নীতির বিরুদ্ধে হতো।
মুখ্যমন্ত্রীকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, 'গতকাল গীতা পাঠের আসর হয়েছে। কিন্তু আপনি যাননি। অনেক সাধু-সন্ত বলছেন, আপনি গেলে ভালো হতো।' উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি বিজেপির অনুষ্ঠানে কীভাবে যাব? আপনারাই আমাকে বলুন। এটা যদি কোনও নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান হত, নিশ্চয় যেতাম। কিন্তু আমি বিজেপির কর্মসূচিতে কীভাবে যাব? আমার তো একটা নীতি আছে। আমি সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি। সব ধর্মকে সম্মান করি। সব ধর্ম, সব জাতি, সব বর্ণকে সম্মান করি। কিন্তু যেখানে বিজেপি সরাসরি যুক্ত, সেখানে আমি যাব কী করে বলুন তো? ওরা বলছে নেতাজিকে ঘৃণা করে, গান্ধীকে মানে না। আমার বাবা-মা আমাকে এই শিক্ষা দেয়নি। আমার বাংলার মাটি, আমাদের শিক্ষকরা এই শিক্ষা দেননি। বাংলাকে যারা অপমান করে, অসম্মান করে তাদের সঙ্গে আমি নেই।'
প্রসঙ্গত, গতবারের মতো এবারও গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতায়। সেখানে বহু মানুষের সমাগম হয়। অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিবেন উদ্য়োক্তারা। তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাদেরও আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তবে ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কাউকে দেখা যায়নি। যদিও গতবারও যাননি মুখ্যমন্ত্রী।
গতকালের অনুষ্ঠানে যদিও হাজির ছিলেবন রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা। শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষদেরও দেখা যায় সেখানে। তাঁরা গীতাও পাঠ করেন।
ধর্মগুরুদের মধ্যে ছিলেন ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী। তিনি কলকাতার গীতা পাঠের ভিড়কে মহাকুম্ভের সঙ্গে তুলনা করেন। বলেন, 'কলকাতার পবিত্র ভূমিতে পাঁচ লক্ষ মানুষ একসঙ্গে গীতা পাঠ করলেন। যে উচ্ছ্বাস, যে ভক্তির জোয়ার চোখে পড়ল, তাতে মনে হচ্ছিল যেন কলকাতায় মহাকুম্ভ বসেছে। এই বাংবলার মানুষই পারে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে। আপনাদের হাতেই সব। সনাতন ঐক্যই এই দেশ ও বিশ্বের শান্তির সর্বোচ্চ পথ। ভারতে চাই সনাতনি। ভারতে চাই ভগবা-এ-হিন্দ’, চাই না গজবা-এ-হিন্দ।'