প্রবীর চক্রবর্তী: অবশেষে জল্পনাই কি সত্যি হচ্ছে? দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল থেকে যে জল্পনার শুরু হয়েছিল, আজ সেই জল্পনাতেই কি শিলমোহর পড়তে চলেছে? আজই বিজেপিতে রাজন্যা (Rajanya Haldar)? শোনা যাচ্ছে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে আজ দুপুরেই নাকি সল্টলেকে বিজেপি দফতরে রাজন্যা-প্রান্তিক (Rajanya Haldar and Prantik Chakraborty) বিজেপিতে যোগদান করবেন! সূত্র বলছে এমন খবর।
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে তাঁর বক্তৃতা নজর কাড়ার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন 'সেনসেশন' হয়ে উঠেছিলেন রাজন্যা হালদার (Rajanya Haldar)। সেখান থেকেই রাজনীতিতে তুরীয় গতিতে উত্থান রাজন্যার। কিন্তু তারপরই আবার আরজি করের ঘটনার পর দলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পড়েন দলের রোষে, শেষে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয় রাজন্যা-প্রান্তিক ((Rajanya Haldar) দুজনকেই। সূত্রের খবর, তখন থেকেই আর তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই দুজনের। আর এবার ২০২৫-এর পুজোয় সেই রাজন্যা-প্রান্তিক জুটিকে দেখা যায় প্রথমে সজল ঘোষের পুজোয়, তারপর মহাষ্টমীতে বিজেপির পুজোয়। সেখান থেকেই জোরদার জল্পনার শুরু!
বিজেপির পুজোয় রাজন্যা হালদার! সঙ্গে প্রান্তিকও! মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় রাজন্যা-প্রান্তিককে দেখা গিয়েছিল বিজেপির পুজো বলে পরিচিত সল্টলেক EZCC-র দুর্গাপুজো মণ্ডপে। ছবিতে রাজন্যা-প্রান্তিকের সঙ্গেই এক ফ্রেমে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতা রুদ্রনীলকেও। তখন থেকেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগেই বিজেপি যোগদান করছেন রাজন্যা-প্রান্তিক? শুরু হয় কানাঘুষো।
প্রসঙ্গত, তার আগের দিন সপ্তমীর সন্ধ্যাতেও রাজন্যা ও প্রান্তিককে দেখা গিয়েছিল বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের পুজো হিসেবে পরিচিত সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে। জল্পনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। কারণ, রাজন্যা ও প্রান্তিক, ২ জনকেই সাসপেন্ড করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। প্রশ্ন ওঠে, সজল ঘোষের পুজোয় 'সাসপেন্ডেড' তৃণমূল নেতা-নেত্রী কীভাবে? তবে কি ভোটের আগেই দলবদল? ফুল বদল? শিবির বদলে এবার গেরুয়া ছাতার তলায় আসবেন রাজন্যা-প্রান্তিক?
যদিও তখন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি রাজন্যা হালদার। আর রাজন্যাকে পাশে নিয়ে সজল ঘোষ দাবি করেছিলেন, “সব কিছুতে রাজনীতি খোঁজার কী আছে। ও (রাজন্যা) আমার বোনের মতো। এরকম আরও অনেকে আসেন। রাজন্যা আগেও আসতেন।” পাশাপাশি তিনি এও বলেছিলেন যে, "ওকে (রাজন্যা) আমি আর তৃণমূল ধরছি না। ও সত্যিকে সত্যি বলে। দেরিতে হলেও বলেছে।"
আর সজল ঘোষকে 'দাদা' বলে সম্বোধন করে রাজন্যার উত্তর ছিল, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ৮০ শতাংশ পুজো প্যান্ডেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট আউট রয়েছে। সেখানে এখানে যদি নরেন্দ্র মোদীর কাট আউট থাকে, তবে দোষের কী! এখানে যাঁরা আসেন, তাঁরা সবাই কি বিজেপি?” কিন্তু তারপরেও সপ্তমীতে সজল ঘোষের পুজো, মহাষ্টমীতে সল্টলেক EZCC-র বিজেপির পুজো, রাজন্যা-প্রান্তিকের ছবি যেন অন্য কথা বলছিল! তবে সত্যিই রাজন্যা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কিনা, তা স্পষ্ট হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই।