• ‘বন্দে মাতরম’ আলোচনার আগে বঞ্চনা ইস্যুতে সরগরম সংসদ, বাইরে বিক্ষোভে তৃণমূল
    প্রতিদিন | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: বাংলার মাটির সৃষ্টি জাতীয় স্তোত্র ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে সোমবার থেকে সংসদে শুরু হচ্ছে বিশেষ আলোচনা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সৃষ্ট এই স্তোত্রের ১৫০ বছর পূর্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে এই পদক্ষেপ। সোমবার সংসদের উভয়কক্ষে আলোচনায় অংশ নেবেন প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিরাই। তবে এনিয়ে আলোচনা শুরুর আগে সংসদ ভবনের বাইরে নিজেদের বকেয়া মেটানোর দাবিতে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদরা। হাতে পোস্টার, তাতে ১০০ দিনের কাজ থেকে একাধিক যৌথ প্রকল্পের অর্থ নিয়ে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ দেখালেন ডেরেক ও ব্রায়েন, দোলা সেন, শতাব্দী রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়রা।

    ‘বিজেপি পরিকল্পিতভাবে বাংলাকে বঞ্চিত করেছে’, ‘মনরেগার টাকা এখনও বাকি’ ? বাংলা, ইংরাজির পোস্টারে এমনই সব প্রতিবাদী কথা লেখা রয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদদের একটা বড় অংশকে দেখা গেল, সোমবার সকালে এসব পোস্টার হাতে নিয়ে সংসদ ভবনের সামনে স্লোগান তুললেন। রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, দোলা সেন, মৌসম বেনজির নুর, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে লোকসভার সাংসদ শতাব্দী রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, মিতালি বাগ, প্রতিমা মণ্ডল, বাপি হালদার ? সকলের হাতে পোস্টার। যাতে স্পষ্টভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তোলা হয়েছে।  

    আসলে, শীতকালীন অধিবেশনে কীভাবে সংসদের ভিতরে-বাইরে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে চাপে রাখতে হবে, তার রূপরেখা ঠিক করে দিয়েছেন দলের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকসভার দলনেতা তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরামর্শের ভিত্তিতে সংসদীয় দল ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করছে। কখনও এসআইআর, কখনও বাংলা ও বাঙালির উপর নির্যাতন, কখনও আবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বিরোধী সুর চড়াচ্ছেন দলীয় সাংসদরা। 

    এদিকে, ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে সংসদের দু’কক্ষে আলোচনায় অংশ নিচ্ছে তৃণমূল। জানা গিয়েছে, লোকসভায় এই ইস্যুতে বাংলায় বক্তব্য রাখবেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও মহুয়া মৈত্র। আর রাজ্যসভায় ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে বলবেন সুখেন্দুশেখর রায় ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আলোচনায় অংশ নেওয়ার খোদ প্রধানমন্ত্রী।

    যদিও সোমবার সংসদে যোগ দিতে দিয়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ”গীতা নিয়ে কিংবা বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। তবে বিজেপি ইতিহাস না জেনে অনেক বক্তব্য চাপিয়ে দিচ্ছে। এই যে বলা হচ্ছে, বন্দে মাতরমের একটা অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে, ব্যাপারটা তা নয়। ১৮৯৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম গানটি গেয়েছিলেন কংগ্রেসের অধিবেশনে। সেসময় তাঁর পরামর্শ নিয়ে বন্দে মাতরমের কিছুটা অংশ বাদ দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ চেয়েছিলেন নেহরু ও নেতাজি। সবদিক বিবেচনা করেই তা বাদ দেওয়া হয়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)