স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: জেলা আদালত থেকে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের প্রতিটি আদালতের কার্যাবলি লিখিতভাবে নথিবদ্ধ করা হোক। এর জন্য প্রণয়ন হোক আইন। এই দাবি করে সংসদে প্রাইভেট মেম্বারস’ বিল পেশ করলেন রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সাকেত গোখলে।
অধিবেশন চলাকালীন প্রতি শুক্রবার সাংসদরা পেশ করতে পারেন প্রাইভেট মেম্বারস’ বিল। সেই অধিকারকে কাজে লাগিয়ে গত সপ্তাহে রেকর্ডস অব কোর্ট প্রসিডিংস বিল, ২০২৫ পেশ করেন তৃণমূল সাংসদ। কেন হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত? তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন, “সংসদীয় কার্যাবলির প্রতিটি লাইন নথিবদ্ধ হয়। দিনের শেষে যা জনসমক্ষে প্রকাশও করা হয়। শুধুমাত্র অসংসদীয় কিছু থাকলে তা বাদ দেওয়া হয়। অথচ আদালতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র লিখিত নির্দেশ প্রকাশ্যে আসে। যেখানে থাকে না সওয়াল জবাব, এমনকী বিচারক বা বিচারপতিদের মৌখিক পর্যবেক্ষণ। এমনটা হওয়া উচিত নয়।” তৃণমূল সাংসদের ব্যাখ্যা, শুধুমাত্র শুনানি নয়। নিয়োগ থেকে শুরু করে বিচারব্যবস্থার যাবতীয় কিছু হয় অন্তর্বিভাগীয়। এমনটা কাম্য নয়।
এই বিল প্রসঙ্গে অন্য এক ব্যাখ্যাও সামনে আসছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন দেখা গিয়েছে, যেখানে বিচারক বা বিচারপতিরা শুনানি চলাকালীন বেশ কিছু কঠোর পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। অথচ লিখিত নির্দেশ বা রায়ের ক্ষেত্রে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। আবার এমন উদাহরণও আছে, যেখানে পর্যবেক্ষণে যা বলা হয়েছে, লিখিত নির্দেশ বা রায়ে তার একেবারে উল্টো মেরুতে অবস্থান নিয়েছেন বিচারক, বিচারপতিরা। এই নিয়ে হয়েছে অনেক বিতর্কও। কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, বর্তমানে লোকসভায় বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ খবরের শিরোনামে এলেও লিখিত নির্দেশে তার উল্লেখ না থাকায় রাজ্যের শাসকদলের অনেক নেতা যা নিয়ে কটাক্ষ, বিদ্রুপ করেছেন। গত সপ্তাহেই অনুপ্রবেশকারীদের গালিচা বিছিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত এক পর্যবেক্ষণ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, “বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়, তবে আমাদের বিচারব্যবস্থায় ইদানিং একটা বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগে বিচারপতিরা কথা কম বলতেন, রায় ও নির্দেশে যা লেখার লিখতেন। এখন প্রচার পেতে অনেকেই উল্টোটা করছেন।”
গত সপ্তাহে লোকসভাতেও একটি উল্লেখযোগ্য প্রাইভেট মেম্বারস’ বিল পেশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। যেখানে হুইপ প্রথা বন্ধের প্রস্তাব দিয়ে লোকসভায় বিল পেশ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, সংসদে ভোটাভুটির ক্ষেত্রে সাংসদদের স্বাধীনতা দেওয়া হোক। এমন ব্যবস্থা চালু হোক, যেখানে পার্টি লাইনের বাইরে গিয়েও ভোট দিতে পারেন সাংসদেরা। উল্লেখ্য, মণীশ কংগ্রেসের অন্দরে ‘বিক্ষুব্ধ’ বলেই পরিচিত।