আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোচবিহারের প্রয়াত সাংবাদিক সুমিতেশ ঘোষের পরিবারের আর্থিক সংকট কাটাতে চাকরি দেওয়ার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার কোচবিহার রবীন্দ্রভবনে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাদা করে কয়েক মিনিট কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় জেলার সাংবাদিকরা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রয়াত সাংবাদিক সুমিতেশ ঘোষের স্ত্রীর একটা চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত কোটায় সুমিতেশ ঘোষের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি দেবেন।
সাংবাদিকদের আবেদনেই মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান। তিনি বলেন, “সুমিতেশ ঘোষের পরিবারের সমস্যা আমাকে জানানো হয়েছে। আমি আমার কোটায় ওঁর স্ত্রীকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কোচবিহারের সাংবাদিকমহল দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিল জেলার এক নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক আর্থিক সংকটে জর্জরিত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করলেও তাঁর পরিবার যাতে প্রশাসনের সহায়তা পায়।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে গুরুতর আর্থিক অনটনের কারণে আত্মহত্যা করেন সাংবাদিক সুমিতেশ ঘোষ। তাঁর মৃত্যু সংবাদ আলোড়ন ফেলে দেয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, সহকর্মী, পাঠক সকলেই ক্ষোভ, দুঃখ ও বেদনা প্রকাশ করেছিলেন। বহু বছর ধরে জেলার নানা সমস্যা তুলে ধরা, মানুষের দৈনন্দিন সংগ্রামকে সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রণী মুখ। অথচ জীবনের শেষ পর্যায়ে আর্থিক চাপ তাঁকে ভেঙে দেয়।সাংবাদিক মহল বারবার দাবি করেছিল, পরিবারকে সরকারি চাকরি ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হোক। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় সেই দাবি বাস্তবায়ন হল বলে মনে করছেন তাঁরা। স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, “এটি শুধু সাহায্য নয়, সংবাদকর্মী সমাজের প্রতি সম্মান। এর ফলে আমরা নতুন করে সাহস পেলাম।”
মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে স্বস্তির হাসি ফুটেছে সুমিতেশ ঘোষের স্ত্রী শিপ্রা ঘোষের মুখেও। তিনি জানান, "দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছিল। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসারের উপর নেমে এসেছিল নানা চাপ। আজ যখন মুখ্যমন্ত্রী আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছেন, তার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। সকল সাংবাদিকদের ধন্যবাদ।"
সমাজের বিভিন্ন স্তরে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা প্রশংসা হচ্ছে। কোচবিহার জেলার বহু মানুষ মনে করছেন মানবিকতার উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের অন্য সাংবাদিক পরিবারগুলির মধ্যেও এই উদ্যোগ আশার সঞ্চার করেছে।
বিশিষ্ট মহলের বক্তব্য, সুমিতেশ ঘোষের মতো সাংবাদিকরা মাঠে-মাঠে ঘুরে সমাজের বাস্তব সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তাঁদের নিরাপত্তা, আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। সেই দায়িত্বই পালন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।