• ইন্ডিগোর বিমান বিপর্যয়ে ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের পর্যটন, পরপর বুকিং বাতিলে চিন্তায় ব্যবসায়ীরা
    প্রতিদিন | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ইন্ডিগোর বিমান বিভ্রাটের জেরে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটন শিল্পে জোর ধাক্কা। হোটেল, হোমস্টেগুলোতে ভিন রাজ্যের পর্যটকদের বুকিং বাতিলের হিড়িক। বিপাকে ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলো। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে শীতকালীন পর্যটন মরশুম এমনকী বড়দিনেও প্রায় ফাঁকা থাকবে পাহাড়! 

    বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রোজদিন ইন্ডিগোর ১২টি বিমান ওঠানামা করে। এরমধ্যে কলকাতা-বাগডোগরা রুটে ৩টি, হায়দরাবাদ-বাগডোগরা রুটে ২টি, দিল্লি-বাগডোগরা রুটে ৩টি, বেঙ্গালুরু-বাগডোগরা রুটে ১টি, মুম্বই-বাগডোগরা রুটে ১টি, চেন্নাই- বাগডোগরা রুটে ১টি এবং দুর্গাপুর-বাগডোগরা রুটে ১টি বিমান ওঠানামা করে। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে এখনও পর্যন্ত সারাদেশে এই সংস্থার ছয়শোর বেশি উড়ান বাতিল হয়েছে। দেরিতে ওঠানামা করছে একাধিক উড়ান। ছয়দিন থেকে ইন্ডিগোর উড়ান বিপর্যয়ের জেরে চরম অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়েছে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের পর্যটন শিল্প।

    ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, বিমান বিভ্রাটের জেরে ইতিমধ্যে দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমে ১৫ শতাংশ ভিন রাজ্যের পর্যটকদের বুকিং বাতিল হয়েছে। লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ কোটি। অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে লোকসান দ্বিগুণের বেশি হতে পারে বলেই ট্যুর অপারেটররা মনে করছেন। কারণ, ইন্ডিগোর উড়ানেই দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, এবং গুয়াহাটির ৮০ শতাংশ পর্যটক দার্জিলিং ও সিকিমে বেড়াতে আসেন। সাম্প্রতিক বিমান বিভ্রাটের ধাক্কায় বছর শেষের ভিড় ও বুকিং বাতিলের হিড়িক পড়েছে। উড়ানের বিলম্ব অথবা বাতিলের কারণে হোটেল, ট্যুর অপারেটররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

    হিমালয়ান হসপিটালিটি এন্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট স্যান্যাল বলেন, “আমার নিজের সংস্থার মাধ্যমে দক্ষিণ ভারতের ১৫টি পর্যটকের দল সিকিমে বেড়াতে আসার কথা। ইন্ডিগোর পরিস্থিতি দেখে ওরা শনিবার হোটেল, হোমস্টে বুকিং বাতিল করেছে। একইভাবে অন্য সংস্থাগুলোতে প্রতিদিন বুকিং বাতিল চলছে।” তিনি জানান, শীতের মরশুমে সাধারণত দিল্লি, মুম্বাই, গুজরাট, আমেদাবাদ, কেরালা, বিহার থেকে বেশি পর্যটক দার্জিলিং ও সিকিমে বেড়াতে আসেন। সিকিম পর্যটন, সেখানকার হোটেল ও হোমস্টেগুলো শীতকালীন মরশুমের দিকে তাকিয়ে থাকে। সিকিমে ১ হাজার ১৮১টি হোটেল, ১ হাজার ৯৮১টি হোমস্টে, ৬০০-র বেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে। এবার তুষারপাত শুরু হতে বুকিং ভালো ছিল। কিন্তু উড়ান বিভ্রাটের জেরে বাতিল হয়ে বুকিং তলানিতে পৌঁছেছে।

    একই পরিস্থিতি দার্জিলিংয়ের। দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্নার জানান, দার্জিলিং পাহাড়ে সাড়ে তিনশো হোটেল রয়েছে। কালিম্পংয়ে দুশো। প্রতিটি হোটেলেই বুকিং বাতিল হচ্ছে। পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “ভিন রাজ্যের পর্যটকরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ওই কারণে যে হারে বুকিং বাতিল হচ্ছে পর্যটন শিল্পে বিরাট প্রভাব পড়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)