• কসবায় রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া, ঘরে বাবার পচাগলা দেহ আগলে মেয়ে! বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার মা
    প্রতিদিন | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার কসবায়। মৃত বাবার দেহ আগলে রাখলেন মেয়ে! মাকে বস্তাবন্দি করে খাটের তলায় রেখে দেওয়া হয়েছিল! সোমবার পুলিশ বাডি়তে গিয়ে বাবার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। বস্তা থেকে মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনা জানাজানি হতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

    দক্ষিণ কলকাতার কবসা বোসপুকুরের একটি বাড়িতে ২৭ বছরের মেয়ে সম্প্রীতি সেনকে নিয়ে থাকতেন দম্পতি সুমিত সেন ও অর্চনা সেন। বছর ৫০ বয়সী সুমিত একটি দোকানে কাজ করতেন। স্ত্রী আদ্যোপান্ত গৃহবধূ। মেয়ে সম্প্রীতি অবিবাহিত। বেশ কিছুদিন ধরে সেন পরিবারের কাউকে দেখতে পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। তাঁদের সন্দেহ হতে কসবা এলাকায় থাকা সেন পরিবারের এক আত্মীয়কে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। ওই আত্মীয় যুবতীকে ফোন করে পরিবারের খোঁজ নেন। জানা গিয়েছে, যুবতী ফোনে বারবার জানাতে থাকেন মা-বাবা ভালো আছে। কিন্তু মা-বাবাকে ফোন দিতে বললে তিনি ফোন দিতেন না। এতেই সন্দেহ বাড়তে থাকে।

    এরপর প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ওই আত্মীয় সোমবার কসবার ওই বাড়িতে যান। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। বহুবার ডাকাডাকির পর দরজা কেউ খোলেনি। বাধ্য হয়ে কসবা থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই চাঞ্চল্য ছটায়। দুর্গন্ধ বেরতে থাকে ঘর থেকে। দেখা যায়, ঘরের মধ্যে পচাগলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই ব্যক্তির দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, বাবা কীভাবে মারা গেলেন? কবে মারা গেলেন? তাঁর মা কোথায়? যুবতীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না।

    এরপর শুরু হয় গোটা বাড়ি তল্লাশি। ঘরে তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায় খাটের তলায় বস্তাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছেন অর্চনা। তাঁর দেহ জীর্ণ হয়ে গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, বস্তাবন্দি অবস্থায় অনেকদিন ধরে ছিলেন তিনি। খাওয়াদাওয়াও পাননি। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই পরিবারের তিন সদস্যই মানসিক ভারসাম‌্যহীন! অসুস্থতার জেরে সুমিতের মৃত্যু হয়েছে বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই জানা যাবে। ওই যুবতীরও চিকিৎসার ব‌্যবস্থা করেছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)