• হরিমন্দিরের পাশে সদ্যোজাতকে ফেলে চম্পট উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে ভর্তি করলেন স্থানীয়রা
    বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি ও বাগডোগরা:  সোমবার সাতসকালে অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন রানিডাঙার ছোটপুথুর বাসিন্দারা। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের কাছে এই গ্রামের হরিমন্দিরের সামনে কে বা কারা এক সদ্যোজাতকে রেখে চলে যায়। রোজকার মতো এদিন সকালে মন্দির সাফসুতরো করতে এসে গ্রামের মানুষ শিশুর কান্না শুনতে পায়। সেই আওয়াজ ধরে এগতেই দেখেন মন্দিরের সামনে জঙ্গলের মাঝে সদ্যোজাত একটি শিশু কেঁদেই চলেছে।  

    খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুহূর্তের মধ্যে গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে যায়।  বাড়ি থেকে কাপড় এনে শিশুকে জড়িয়ে শীতের হাত থেকে বাঁচাতে মহিলারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউবা মাতৃদুগ্ধের ব্যবস্থা করতে ছোটাছুটি করেন।  সকলেরই প্রশ্ন, ঠান্ডার মধ্যে কে এই অমানবিক কাণ্ড ঘটাল? সেই উত্তরের সন্ধানে তদন্তে নেমেছে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ। 

    পুলিশের সহায়তায় গ্রামের বাসিন্দারা শিশুকে নিয়ে যান উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে শিশু বিভাগে রাখা হয়েছে সদ্যোজাতকে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, একদিনের বেশি বয়স নয় এই শিশুপুত্রের।  

    স্থানীয় বাসিন্দা সাধু বর্মন, সহদেব বর্মন বলেন, মন্দিরের সামনে যেতেই শিশুর কান্নার আওয়াজ পাই। সামনে গিয়ে দেখি একটি কাপড়ে মোড়ানো নবজাতক পড়ে রয়েছে। পুলিশকে খবর দিই। কন্যাসন্তান হলে সহজেই ধরে নেওয়া যেত, যে মেয়ে হওয়ার অপরাধে তাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে গিয়েছে কোনও বাবা-মা। কিন্তু এই শিশু তো পুত্র। সন্তানলাভের জন্য যেখানে বহু দম্পতি ছোটাছুটি করছেন। লাখ লাখ টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সেখানে এমন সুন্দর ফুটফুটে পুত্রসন্তানকে কেন ফেলে রেখে গেল এভাবে? 

    এদিকে, খবর পেয়ে পানিট্যাঙ্কি ও শিবমন্দির থেকে দু’জন আসেন খোঁজ নিতে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান, শিশুটিকে দত্তক নেওয়া যাবে কিভাবে।  উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার গৌতম দাস বলেন, আমরা এদিন একটি পরিত্যক্ত শিশু পেয়েছি। শিশু বিভাগের তার চিকিৎসা চলছে। ১ কেজি ৮০০ গ্রাম বাচ্চাটির ওজন। সরকারি নিয়ম মেনে আমরা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি, স্থানীয় থানা, জেলাশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এরআগেও এখানে এ ধরনের শিশু এসেছে। সুস্থ করে তোলার পর সরকারি নিয়ম মেনে সেই শিশুদের  জায়গা হয়েছে হোমে। 

    • সদ্যোজাত উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)