গোয়ার নাইট ক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বাগডোগরার যুবকের
বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, বাগডোগরা: বাবা নেই। তাই সংসারের হাল ধরতে দু’বছর আগে গোয়ায় পাড়ি দেন বাগডোগরার যুবক সুভাষ ছেত্রী। অন্য যুবকদের মতো বছর চব্বিশের সুভাষের স্বপ্ন ছিল বাড়ি তৈরি করা, সংসার পাতা। এজন্য আগামী মার্চ মাসে তাঁর বাড়ি ফেরার কথাও ছিল। কিন্তু গোয়ার ‘অভিশপ্ত’ নাইট ক্লাবে ‘ছাই’ তাঁর স্বপ্ন। শনিবার রাতে সেই ক্লাবে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক ওই ঘটনায় পরিবারে নেমে এসেছে শূন্যতা। তাঁর মৃতদেহ আনতে গোয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারেট।
বাগডোগরা থানার চৌপুকুরিয়া বানুরছাট গ্রামে সুভাষের বাড়ি। বেশ কয়েক বছর আগে বাবা মনবাহাদুর ছেত্রীর মৃত্যু হয়। সংসারের বোঝা চাপে সুভাষের কাঁধে। তাঁর দিদির বিয়ে হয় কালিম্পংয়ে। বানুরছাট গ্রামে মাকে নিয়ে থাকতেন সুভাষ। দু’বছর আগে কর্মসূত্রে গোয়ায় পাড়ি দেন। সেখানকার নাইট ক্লাবে কাজ করতেন। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত সেই নাইট ক্লাবে মৃতদের তালিকায় সুভাষ রয়েছেন।
সোমবার সকালে এমন খবর চাউর হতেই মৃত যুবকের বাড়িতে ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে মুর্ছা যান সুভাষের মা। তাঁকে কোনওভাবে সামাল দিচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। মৃতের দিদি ঊর্মিলা ছেত্রী বলেন, গত বছরের দশমীতে ভাইয়ের আসার কথা ছিল। ছুটি না পাওয়ায় আসতে পারেনি। নতুন বছরের মার্চ মাসে আসবে বলে চারদিন আগে জামাইবাবুকে জানিয়েছিল। তা আর হল না। ভাইয়ের ও পরিবারের সব স্বপ্নই শেষ।
সংশ্লিষ্ট গ্রাম ফাঁসিদেওয়ার হেডমুড়ি-সিঙ্গিঝোরা পঞ্চায়েতের অধীনে। গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা বিজয় মঙ্গরের বাড়ি এখানেই। তিনি বলেন, সুভাষ আমার প্রতিবেশী। জমির ঋণ মেটানো, বাড়ি তৈরির স্বপ্ন নিয়েই গোয়ায় কাজ করতে গিয়েছিল ছেলেটা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল।
সুভাষের মৃতদেহ গ্রামে ফেরাতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রাতে গোয়া থেকে মৃতদেহ বিমানে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে দেহ আসবে বাগডোগরায়। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাকেশ সিং বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। মৃতদেহ এখানে নিয়ে আসার জন্য গোয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। • ভেঙে পড়েছে মৃতের পরিবার। - নিজস্ব চিত্র।