• ইটাহারের নন্দনগ্রামের নলেন গুড় যাচ্ছে কোচবিহার থেকে কলকাতা
    বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ইটাহার: শীতের মরশুমে খেজুরের রসে তৈরি নলেন বা পাটালি গুড়ের জুড়ি মেলা ভার! ইটাহারের নন্দনগ্রামের নলেন গুড় যাচ্ছে কলকাতা থেকে কোচবিহার- রাজ্যের সর্বত্র। শীত পড়তেই নন্দনগ্রামে এখন নলেন গুড় তৈরির ব্যস্ততা। বিকেলে খেজুর গাছে মাটির হাঁড়ি বাঁধা থেকে শুরু করে ভোরে রস সংগ্রহ, সকালে সংগৃহীত রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করা থেকে পাইকারদের কাছে বিক্রি - দম ফেলার ফুরসত নেই নন্দনগ্রামের বাসিন্দাদের। এখানকার প্রায় কুড়িটি পরিবার খেজুর রস দিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত।

    তাদের তৈরি নলেন গুড়ের চাহিদা রাজ্যজুড়ে। নন্দনগ্রামের এই গুড় পাইকারদের হাত ধরে চলে যায় উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। কারিগররা প্রায় ২০০ টাকা কেজি দরে তাদের কাছে এই গুড় বিক্রি করেন। খুচরো বাজারে দাম বেড়ে যায়। চাহিদা অনুযায়ী নলেন গুড় তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন নন্দনগ্রামের রঘুনাথ সরকার, হারান সরকার, অসীম সরকার, অমৃত সরকাররা।

    প্রায় ৪০ বছর ধরে ইটাহারের নন্দনগ্রামের রঘুনাথ, হারানরা নলেন বা পাটালি গুড় তৈরি করে অর্ডার অনুযায়ী ইটাহার ও রায়গঞ্জের ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করেন। সেখান থেকে এই গুড় চলে যাচ্ছে কলকাতা, মালদহ, বালুরঘাট, শিলিগুড়ি, কোচবিহার সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। 

    নন্দনগ্রামের প্রতিটি পরিবার এলাকায় ৩০-৫০টি করে খেজুর গাছ লিজে নিয়েছে। প্রতিদিন বিকেলে গাছে হাঁড়ি বেঁধে রেখে পরদিন ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহ করেন অসীমরা। সেই রস জাল দিয়ে মাটির পাত্রে ছাঁচে ফেলে নলেন বা পাটালি গুড় প্রস্তুত করেন তাঁরা। 

    গুড় প্রস্তুতকারক রঘুনাথ সরকার ও অনন্ত সরকার বলেন, ভালো মানের নলেন গুড় পাইকারি প্রায় ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তাঁরা প্রত্যেকে দিনে গড়ে ১৫ কেজি গুড় বিক্রি করেন। খুচরো বিক্রি হয় তিনশো থেকে চারশো টাকা কেজি দরে।

    কারিগররা জানান, মূলত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলে এই গুড় তৈরির কাজ। এই কয়েকমাস গুড় বিক্রি করে মুখে হাসি ফোটে অমৃত ও অসীম সরকারদের। অমৃতের কথায়, বহু বছর থেকে গুড় তৈরি করছি। শীতে নলেন গুড়ের চাহিদা বেশি। এবারও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। লাভ থাকায় কষ্ট হলেও শীতের ভোরে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। এক ব্যবসায়ী তন্ময় দাস বলেন, ইটাহারের নন্দনগ্রামের নলেন গুড়ের চাহিদা ভালোই। এই গুড় আমরা উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পাঠাই। • জাল দেওয়ার পর পাত্রে ঢালা হচ্ছে নলেন গুড়। - নিজস্ব চিত্র। 
  • Link to this news (বর্তমান)