• প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর ফের বর্ধমানের তারামণ্ডল চালু করতে উদ্যোগী শিক্ষাদপ্তর
    বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর ফের মেঘনাদ সাহা তারামণ্ডল চালু করার উদ্যোগ নিল শিক্ষাদপ্তর। শনিবার শিক্ষাদপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বিনোদ কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা তারামণ্ডল পরিদর্শন করেন। ভিসি, রেজিস্ট্রার সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরাও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। থ্রি-ডি মেশিনটি যে ঘরে রয়েছে, সেটির দরজা খুলে তাঁরা ভিতরে ঢোকেন। সেখানকার অবস্থা দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা সেটি চালু করার উপায় জানতে চান। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করতে ১৯৯৪ সালে তারামণ্ডলটি চালু হয়। কিন্তু গত দু’বছর আগে থ্রি-ডি মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্রছাত্রীরা এখানে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যান। জাপানে তৈরি এই মেশিন সচল করতে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হবে। টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় মেশিনটি চালু করা যায়নি। শনিবার শিক্ষাদপ্তরের আধিকারিকরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টাকার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেন। টাকা বরাদ্দ করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন। তাতেই পড়ুয়ারা আশা দেখছেন। 

    তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেরই দাবি, কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে এই সমস্যা অনেক আগেই সমাধান হয়ে যেত। এক বা দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বড় বিষয় নয়। রাজ্যের অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এমন প্রতিষ্ঠান নেই। ১৯৯৪ সালে তারামণ্ডল চালু হওয়ার পর শুধু বর্ধমান নয়, দক্ষিণবঙ্গের পড়ুয়াদের মধ্যে উৎসাহ দেখা যায়। বিশেষ করে মহাকাশ নিয়ে যাঁদের আগ্রহ রয়েছে, তাঁদের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অনেক।

    বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনুপম দাস বলেন, তারামণ্ডল বন্ধ থাকার কোনও যুক্তি নেই। আরও আগে এটি চালু করার দরকার ছিল। এখানে পড়ুয়ারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে আসেন, সেটা পূরণ হয় না। এত দামি মেশিন দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অপর এক পড়ুয়া বলেন, মহাকাশ নিয়ে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। এখানে এসে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেত। তিন বছর আগেও এখানে পড়ুয়াদের ভিড় উপচে পড়ত। শিক্ষালাভের জন্য তারা আসত। এখন কিছু পড়ুয়া বেড়াতে আসে। মহাকাশ দেখানোর জন্য দূর-দূরান্ত থেকে অভিভাবকরা এখানে আসেন। তারামণ্ডলে ঢোকার পর তাঁরা জানতে পারেন, মেশিন বিকল। তখন হতাশ হয়ে ফিরে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকে না। শিক্ষাদপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকরা তারামণ্ডল পরিদর্শন করার পরও সেটি আদৌও চালু হবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে রয়েছেন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)