আজ ডিভিসির সঙ্গে বৈঠক পর্যাপ্ত জল ছাড়ার দাবি জানাবে রাজ্য
বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: রবি মরশুমে ডিভিসির দুর্গাপুর জলাধার থেকে বাঁকুড়ায় বেশি পরিমাণ সেচের জল দেওয়ার দাবি উঠছে। তার জন্য আজ, মঙ্গলবারের বৈঠকে দাবি জানানো হবে। ওই বৈঠকে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ও রাজ্যের কর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি থাকবেন জেলার জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকরা। দুর্গাপুর জলাধার থেকে সেচখালে বড়জোড়া ও সোনামুখী ব্লক এলাকার জন্য বোরো চাষের জল দেওয়া হবে। কিন্তু, পাত্রসায়র ব্লক এলাকার চাষিরা বঞ্চিত হবেন। বেশি জল ছেড়ে যাতে পাত্রসায়র পর্যন্ত পাঠানো যায় সেব্যাপারে ইতিমধ্যেই জেলা ও ব্লকস্তরে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। আজ তা ওই বৈঠকে জানানো হবে।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কৃষি সেচ কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বরূপা সেনগুপ্ত বলেন, গতবারও ডিভিসি কর্তৃপক্ষ দু’টি ব্লকের জন্য জল দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। আমরা একপ্রকার জোর করে পাত্রসায়রের জন্য দাবি আদায় করেছিলাম। এবারও তা করা হবে। আজ ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের শীর্ষস্তরের আমলাদের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। সেখানে কৃষি ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আমিও যোগ দেব। ওই বৈঠকে ডিভিসিকে বেশি জল দেওয়ার ব্যাপারে রাজি করানোর জন্য আমরা দাবি জানাব।
সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ডিভিসি-র রাইট ব্যাঙ্ক মেইন ক্যানেলের ১০৩৭ চেইন (সোনামুখী ব্লকের ধানসিমলা এলাকা) পর্যন্ত জল দেওয়া হবে। পাত্রসায়র ব্লকের জন্য ওই ক্যানেলের ১২২৭ চেইন পর্যন্ত জল পাঠাতে হবে। যা ধানসিমলা থেকে আরও ছ’কিলোমিটার দূরে রয়েছে। বর্ধিত ওই অংশ পর্যন্ত জল গেলে পাত্রসায়র ব্লক এলাকার আরও ছ’হাজার একর জমি সেচসেবিত হবে। আপাতত যে পরিমাণ জল ছাড়ার কথা ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাতে বড়জোড়া ও সোনামুখী ব্লকের ১১ হাজার ৯০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা যাবে।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলায় মূলত ডিভিসি-র দুর্গাপুর ব্যারাজ ও মুকুটমণিপুর জলাধারের জলে চাষবাদ হয়। এছাড়াও কিছু এলাকায় গাঙদুয়া, তালবেড়িয়া সহ অন্যান্য জলাধার থেকে সেচের জল পাঠানো হয়। বাঁকুড়া জেলার উত্তরে দামোদর নদ সংলগ্ন ব্লকগুলিতে ডিভিসি-র জলে রবি মরশুমে বোরো চাষ হয়। ধানের পাশাপাশি অনেকে গম, সরষে, কলাই চাষেও ওই জল ব্যবহার করেন। পাত্রসায়র ব্লকও ডিভিসি-র জলের উপর নির্ভরশীল।
ওই ব্লকের চাষি রবিলোচন পাল, সৌরভ দাস বলেন, প্রতিবারই রবি চাষে জল দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করা হয়। এবারও সোনামুখী পর্যন্ত জল দেওয়া হবে বলে শুনেছি। সামনে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। জল না পেলে এলাকার চাষিদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। বিষয়টি যেন রাজনৈতিক দলগুলি ভেবে দেখে। কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা আমাদের এলাকায় রয়েছেন। আমরা যাতে সেচের জল পাই, তা নিয়ে তাঁদেরই উদ্যোগী হতে হবে।