আগামী ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে শুনানি, মেয়ে সুইটির বাংলাদেশ থেকে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় মা লাজিনা বিবি
বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আগামী শুক্রবার, সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। বাংলাদেশে আটকে থাকা মেয়ে ও দুই নাতির বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছেন মা লাজিনা বিবি। তাঁর আশা, মানবিকতার খাতিরে ওইদিন দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাদের দেশে ফেরানোর নির্দেশ দেবে।
বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশি সন্দেহে পাইকরের দুই পরিবারের ছ’জনকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দিল্লি পুলিশ। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে প্রায় ছ’মাসেরও বেশি সময় পর বাংলাদেশে আটকে থাকা সোনালি বিবি ও তাঁর নাবালক ছেলেকে ভারতে ফেরানো হয়েছে। কিন্তু এখনও আটকে সোনালির স্বামী দানিশ শেখ, সুইটি বিবি এবং তাঁর দুই সন্তান বছর পনেরোর কুরবান ও পাঁচ বছরের ইমাম। সোনালির দেশে ফেরার পর থেকে উদ্বেগ আরও বেড়েছে সুইটির ষাটোর্ধ্ব মা লাজিনা বিবির। মায়ের জন্য কেঁদে চলেছে লাজিনার কাছে থাকা সোনালির মেজ ছেলে ইমরান শেখ। লাজিনার প্রশ্ন, বাংলাদেশে সরকার তাঁদের ফেরাতে চাইলেও কেন উদ্যোগ নিচ্ছে না ভারত সরকার?
বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ফারুক আলির বাড়িতে রয়েছেন সুইটিরা। এতদিন বাংলাদেশে থেকে সোনালি ও সুইটিদের আইনি সাহায্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ তথা রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি মফিজুল শেখ। তাঁর বাড়ি পাইকরে। সোনালিদের সঙ্গে তিনিও দেশে ফিরে এসেছেন। মফিজুল বলেন, রবিবার সুইটিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরা কান্নাকাটি করছে। কবে দেশে ফিরবেন জানতে চাইছেন। মানবিকতার খাতিরে কতদিন ফারুক তাঁদের বাড়িতে থাকতে দেবেন, সেটাই চিন্তার। বাংলাদেশ সরকার তাঁদের খাবার বা থাকার জন্য কোনও খরচ দিচ্ছে না। সুইটিদের বলেছি, কষ্ট করে থাকতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সোনালির মতো ওদেরও দেশে ফেরানোর জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
আগামী শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রয়েছে। সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন লাজিনা। তিনি বলেন, নামাজ পড়ার সময় আল্লার কাছে একটাই আবেদন করছি, ওইদিন যেন সুপ্রিম কোর্ট সুইটি সহ বাকিদের দেশে ফেরানোর নির্দেশ দেয়। নাতি শুধু মা-মা করে চলেছে। শনিবার মেয়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছে। খুবই কাঁদছে। সামিরুল সাহেব বলেন, আগামী শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি রয়েছে। আশা করি, সোনালির মতোই সুইটি সহ বাকি বৈধ নাগরিকদের দেশে ফেরানোর নির্দেশ দেবে কোর্ট। সেই আশায় আমরাও রয়েছি। রামপুরহাট মেডিকেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনালি ভালো আছেন। মেডিকেলের এক আধিকারিকের মতে, সোনালির এখন যা শারীরিক অবস্থা, তাতে তাঁর বাড়ি চলে যাওয়াই ভালো। মালদহ মেডিকেলের ইউএসজি রিপোর্ট জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তাঁর প্রসবের দিন রয়েছে। এব্যাপারে সহকারী সুপার ঈশ্বর চট্টোপাধ্যায় বলেন, এদিন মেডিকেল বোর্ড বসেছিল। তবে তাঁর ছুটির ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। উদ্বেগে বাংলাদেশে আটকে থাকা সুইটি বিবির মা ও নাবালক ছেলে। -নিজস্ব চিত্র