• বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আগাম প্রস্তুতি, পরিদর্শন সারলেন জেলাশাসক
    বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতিতে নামল হুগলি জেলা প্রশাসন। সোমবার বন্যা কবলিত খানাকুলের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন হুগলির জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের কো মেন্টর শেখ হায়দার আলি, অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) অনুজপ্রতাপ সিংহ, আরামবাগের মহকুমা শাসক রবি কুমার প্রমুখ। জেলাশাসক হিসেবে দায়িত্বভার নেওয়ার পর এই প্রথম তিনি খানাকুলে আসেন। ঘুরে দেখেন বিভিন্ন স্পট। এমনকি, আরামবাগে প্রফুল্লচন্দ্র সেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন। স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো নিয়ে তিনি নির্দেশও  দিয়েছেন।

    উল্লেখ্য, ফি বছর আরামবাগ মহকুমা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার জেরে প্লাবিত হয় আরামবাগ, গোঘাট খানাকুল ও পুরশুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। বহু জায়গায় বাঁধ ভাঙার ঘটনাও ঘটে। চলতি বছরে অতি বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় খানাকুলের নিচু এলাকায়। তাই বর্ষার আগে ও পরে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী ধরনের পরিকল্পনা করা উচিত তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে, এদিন জেলাশাসক মহকুমা এলাকা ঘোরেন। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুলে অরোরা খালের সংস্কার করছে সেচদপ্তর। এদিন জেলাশাসক খানাকুলের শশাখালি এলাকায় নব নির্মিত স্লুইস গেট, কংক্রিটের সেতু তৈরির কাজ খতিয়ে দেখেন। কীভাবে এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা বোঝার জন্য মানচিত্রতেও চোখ বোলান। কথা বলেন সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গেও। এছাড়া মাইনান এলাকায় গিয়েও খাল সংস্কারের কাজ দেখেন। বন্যা মোকাবিলায় নদী বাঁধ সংস্কার সহ অন্যান্য কাজগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গুণগত মান বজায় রেখে যাতে শেষ করা যায় তার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। সেচদপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, জেলাশাসক সংস্কারের কাজ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এদিনই জেলাশাসক খানাকুল-২ বিডিও অফিসে যান। সেখানে বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। তিনি ব্লক প্রশাসনকে দ্রুত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। পরে জেলাশাসক আরামবাগ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সেখানে এমএসভিপি সহ হাসপাতালের অন্যান্য আধিকারিক, বিভাগীয় প্রধানদের কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। শিশু, মহিলা ও প্রবীণদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় জোর দেন জেলাশাসক। পাশাপাশি পরিকাঠামো নিয়ে কোনও চাহিদা থাকলে, তা জেলা প্রশাসনকে জানাতেও বলা হয়েছে। এদিন তিনি চাঁপাডাঙা এলাকায় দামোদরের বাঁধ দেখেন। 

    জেলাশাসক বলেন, বন্যা মোকাবিলায় কী কী কাজ চলছে, তা দেখলাম। বন্যা পরিস্থিতির সময় কী ধরনের সমস্যা ছিল, তা খতিয়ে দেখেছি। এরজন্য আগাম পরিকল্পনাও নেওয়া হবে। 

    মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, বছরে প্রায় পাঁচ হাজার প্রসূতি এখানে সন্তান প্রসব করেন। হুগলি ছাড়াও পাশের জেলা থেকেও মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন। হাসপাতালে আগামী দিনে কী ধরনের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কিছু আবেদন পাঠানো হয়েছে, তার অনুমোদন মিলবে বলে আশা করা যায়। সম্প্রতি হাসপাতালে শিশুর মৃতদেহ বদল প্রসঙ্গে জেলাশাসক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। রিপোর্ট এলে তা খতিয়ে দেখা হবে। কোথাও কোনও খামতি আছে কি না, তা দেখতে হবে। 

     অরোরা খাল পরিদর্শন করছেন হুগলির জেলাশাসক। রয়েছেন এসডিও সহ অন্যান্যরা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)