সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুম্বইয়ে ভোটার তালিকা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক ঝড় উঠেছে। বৃহনমুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর প্রকাশ্যে ভোটার তালিকায় বড় গোলযোগ। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এক ভোটারের নামই নাকি ১০৩ বার উঠে এসেছে। ১.০৩ কোটি ভোটারের মধ্যে প্রায় ৪.৩৩ লক্ষ মানুষের নাম একাধিকবার নথিভুক্ত হয়েছে, ফলে মোট ডুপ্লিকেট নামের সংখ্যা ১১ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিএমসি অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, যতবারই নাম থাকুক না কেন, কোনও একজন ভোটার কেবল একবার একটিই ভোট দিতে পারবেন। এই গরমিল দূর করতে ২৩ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে নেমেছে প্রশাসন, যেখানে লক্ষ্য সব ডুপ্লিকেট নাম শনাক্ত করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া।
প্রসঙ্গত, গত আগস্টে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের ভোটার তালিকা তুলে ধরে অভিযোগ করেন যে এই দুই রাজ্যের ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার রয়েছে। তিনি বলেন, সংবিধানের ভিত্তি হল ভোট। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের ভাবতে হবে যে সঠিক ব্যক্তিদের ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কিনা?
ভোটার তালিকায় কি ভুয়ো ভোটার যোগ করা হয়েছিল? ‘মহারাষ্ট্রের নির্বাচন চুরি করা হয়েছিল। আমরা মহারাষ্ট্রে নির্বাচনে হেরেছি। মহারাষ্ট্রে ৪০ লক্ষ ভোটার রহস্যজনক। পাঁচ মাসে এখানে অনেক ভোটার যুক্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সম্পর্কে উত্তর দেওয়া উচিত। তাদের বলা উচিত ভোটার তালিকা সঠিক নাকি ভুল।’ এখন রাহুলের সেই অভিযোগই ভিত্তি পাচ্ছে বলে মনে করছে বিরোধী শিবির।
এদিকে বিরোধীরা সুর চড়িয়েছে। শিবসেনা (উদ্ধব) মুখপাত্র আনন্দ দুবে অভিযোগ করেছেন, ভোটের আগে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের অনিয়ম বাড়তে দেওয়া হচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার দায় এড়াতে পারে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভোট লুঠের কোনও চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। অন্যদিকে, বিজেপির মুম্বই সভাপতি অমিত সাতম এই বিতর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে জানান, ভোটার তালিকায় নামের পুনরাবৃত্তি নতুন কোনও ঘটনা নয়। নির্বাচন কমিশন বিশেষ উদ্যোগ, যেমন এসআইআর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা নিয়মিতভাবে সংশোধন করছে। ফলে একজন ভোটার শেষ পর্যন্ত একবারই ভোট দিতে পারবেন।
এই চাপান-উত্তরের মাঝেই বঞ্চিত বহুজন অঘাড়ি প্রধান প্রকাশ আম্বেদকর প্রশ্ন তুলেছেন, যদি সত্যিই প্রমাণ থাকে, তবে বিরোধীরা আদালতে কেন যাচ্ছেন না? বারবার জনসমক্ষে অভিযোগ করে কোনও ফল হবে না, আদালতেই প্রকৃত সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।