• মোদির ‘বঙ্কিম দা’ সম্বোধন, সংসদের বাইরে মনীষীদের ছবি হাতে বিক্ষোভে তৃণমূল সাংসদরা
    প্রতিদিন | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, এই নামগুলি ঘিরে বাঙালির এক বিশেষ আবেগ রয়েছে। সেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা, বন্দেমারতম-কে ঘিরে সংসদে যে আলোচনা হয়েছে, তা খুব একটা ভাল চোখে দেখছেন না বাংলার মানুষ! তারই মধ্যে আবার প্রধানমন্ত্রীর ‘বঙ্কিম দা’ সম্বোধনে আগুন ঘৃতাহুতির কাজ করেছে। মোদির এহেন বক্তব্যের পর সোমবারই সংসদের বাইরে এবং ভিতরে গর্জে ওঠে তৃণমূল। সমাজমাধ্যমেও এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয় শাসকদল। মোদির মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবারও প্রতিবাদে তৃণমূল সাংসদরা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি হাতে এদিন সংসদের বাইরে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় তাঁদের।

    ‘বন্দে মাতরম’ ইস্যুতে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। এর মধ্যেই সোমবার বন্দে মাতরমের ১৫০ বছর উপলক্ষে লোকসভায় আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ বলে উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতা সংগ্রামী পুলিনবিহারী দাসকে বললেন ‘পুলিন বিকাশ দাস’। এমনকী মাস্টারদাকে বললেন ‘মাস্টার সূর্য সেন’। যা নিয়ে মোদির বক্তব্য চলাকালীনই প্রতিবাদ জানায় তৃণমূল কংগ্রেস। আপত্তি তোলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। বার তিনেক আপত্তির পর সৌগতর কথা পৌঁছয় মোদির কানে। দমদমের সাংসদ বলেন, ”অন্তত বাবু বলুন।” সঙ্গে সঙ্গে ভাষণ থামান মোদি। ভুল শুধরে তিনি বলেন, “আপনার ভাবনাকে আমি সম্মান করি। বঙ্কিমদা বলা আমার ভুল। ওনাকে ‘বঙ্কিমবাবু’ বলছি।”

    কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বাংলা ও বাঙালিকে অপমান করেছেন অভিযোগে সংসদের অন্দরে ও বাইরে প্রতিবাদে গর্জে ওঠে তৃণমূল কংগ্রেস। এহেন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার-সহ তৃণমূল সাংসদরা। এদিনও সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের প্রতিবাদে সংসদে সেন্ট্রাল হলের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূল সাংসদরা। তবে এদিন বিক্ষোভ প্রতিবাদ ছিল মৌন।

    এই প্রসঙ্গে জয়নগরের তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর বক্তব্যে যেভাবে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সম্বোধন করেছেন তার প্রতিবাদেই এদিনের বিক্ষোভ।” তাঁর কথায়, ”প্রধানমন্ত্রী বাংলার সাহিত্য, বাংলার সংস্কৃতি, বুদ্ধিজীবী মানুষ, সাহিত্যিক সবাইকে অপমান করেছেন, বাংলাকে অপমান করেছেন।” প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের জন্য বাংলার মানুষ কখনই তাঁকে ক্ষমা করবে না বলেও মন্তব্য তৃণমূল সাংসদের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)