স্টাফ রিপোর্টার: কোথাও টোটো, কোথাও ম্যাজিক গাড়ি, কোথাও ম্যাক্সি ক্যাব কোথাও আবার ওমনি ভ্যান। পড়ুয়াদের স্কুলে আনা-নেওয়ার জন্য রাজ্যজুড়েই বে-আইনিভাবে ব্যবহার হচ্ছে এই সব গাড়িই। কোথাও কোথাও তো কাটাইয়ে যাওয়া গাড়িও বে-আইনিভাবে পুলকার হিসাবে ভাড়া খাটছে। আর তাতেই প্রশ্নের মুখে পড়ছে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা। এবার স্কুলপড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তৎপর হচ্ছে পরিবহণ দপ্তর।
সোমবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে পুলিশ, স্কুলশিক্ষা এবং পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। ছিলেন প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপার, আরটিও-রাও। সেখানেই পুলকার সংগঠনগুলোকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত গাড়িতেই স্কুলে পড়ুয়া আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। তবে বহুক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেই গাড়িগুলো রাস্তায় চলার অযোগ্য। সিএফ ফেল, ইনস্যুরেন্স ফেল। তাই আগামীদিনে পড়ুয়া বহনকারী সমস্ত গাড়িকেই প্রতিবছর সিএফ করানোর কথা ভাবছে পরিবহণ দপ্তর।
পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর পরিষ্কার কথা, “লজঝড়ে গাড়িতে পড়ুয়াদের বহন করা যাবে না।” ব্যক্তিগত গাড়িকে তিন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিবহণ দপ্তরের তরফে। এ ছাড়াও স্কুলবাস এবং পুলকার সংক্রান্ত বেশ কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনওরকম আপস নয়। আমরা পুলকার সংগঠনগুলোকে সতর্ক করেছি। গাড়ির ফিটনেসের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। যেমন গাড়িই হোক, প্রতিবছর সেগুলো সিএফ করানোর কথা ভাবা হচ্ছে।” এদিনের বৈঠকে বে-আইনি, সিএফ ফেল গাড়ি বন্ধে নজরদারি বাড়ানোর কথাও বলা হয়। পাশাপাশি অভিভাবকদেরও আরও সচেতন হতে বলা হয়েছে। বাচ্চাদের স্কুলগাড়ি ঠিক করার আগে তার কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তা দেখে নিতে বলা হয়েছে। গাড়ির চালকের নাম ফোন নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স সব বিষয়ে তথ্য রাখতে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে। তা ছাড়া পুলকার মালিকদের বলা হয়েছে, স্কুলবাস এবং পুলকারে একজন অ্যাটেন্ডেন্ট রাখতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট রং করা, গাড়ির সামনে ‘অন স্কুল ডিউটি’ লিখে বোর্ড ব্যবহার, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, ভিএলটিডি লাগানো-সহ একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিও কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পরিবহণ দপ্তরের তরফে। গাড়ির তালিকা নির্দিষ্ট রাখা, পরিবহণ ব্যবস্থাপনার জন্য একজন আধিকারিক নিয়োগ, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দিতে বলা হয়েছে।
পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, “সমস্ত নিয়ম মেনেই আমরা গাড়ি চালাই। প্রশাসনের উচিত বেআইনি পুলকার বন্ধ করা।” এ ছাড়াও এদিন টোটো নিয়েও বৈঠক হয়। সেখানে প্রত্যেক জেলাকেই টোটো রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বাড়াতে আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।